...

ওজন বাড়ানোর সহজ ১০টি উপায়

পৃথিবী জুড়ে যেখানে চিকন হবার ধুম, সেসবের মাঝে মোটা হবার টিপস? খুব অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? আপনি অবাক হলেও, অনেকেই কিন্তু হবেন না। বরং এই ওজন বাড়াবার টিপস গুলোই তার জন্য এক রকম স্বস্তির নিঃশ্বাস বয়ে নিয়ে আসবে। বাড়তি ওজন যেমন একটা সমস্যা, ঠিক একইভাবে সমস্যা রুগ্ন বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়াটা। চিকন বা স্লিম মানেই সুন্দর নয়, বরং সৌন্দর্য নিহিত হচ্ছে নিজের শরীরের গড়ন অনুযায়ী আদর্শ ওজনে অবস্থান করার মাঝে। আদর্শ ওজনের চাইতে যদি ৫ থেকে ১০ কেজি থাকে আপনার ওজন, তবেই বুঝতে হবে আপনি রুগ্ন মানুষ। একজন রুগ্ন বা “আন্ডার ওয়েট” মানুষের চেহারা স্বাভাবিক ভাবেই তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারায়।ওজন

ওজন বাড়ানোর সহজ ১০টি উপায়

চাপা ভাঙ্গা হয়, চোখের কোলে কালি পড়ে, কাজকর্মে উৎসাহ লাগে না কিংবা খুব ক্লান্ত বোধ করেন সব সময়। বেশী রোগা মানুষের শরীর সঠিকভাবে গঠিত হয়না, বা বয়সের সাথে সঠিক ভাবে রূপান্তরিত হয়না। ফলে তাঁরা ভুগে থাকেন ভীষণ হীনমন্যতায়ও। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে চেষ্টা করে করেও কিছুতেই ওজন বাড়াতে পারেন না। অনেকে হয়তো খুব খাওয়া দাওয়া শুরু করেন, কিন্তু তাতে লাভ আসলে বেশী কিছু হয় না। বরং অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যহানি হতে শুরু করে। কেবল মোটা হলেই তো হবে না, হতে হবে সুগঠিত শরীরের অধিকারী। তাই না? কিন্তু তাহলে কি করবেন? যদি ওজন বাড়িয়ে সুগঠিত শরীর পাবার সম্ভব-অসম্ভব সকল চেষ্টা করেই ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার উপকারে আসবে এই টিপস গুলো। নিয়ম করে মেনে চলতে চেষ্টা করুন, অচিরেই নিজের মাঝে পরিবর্তন দেখতে পাবেন নিঃসন্দেহে।

পড়ুন  কানের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া ৫টি উপায়

সকালে উঠে বাদাম ও কিসমিস-
ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম আর কিসমিসের বিকল্প নেই। রাতে ঘুমাবার সময় আধা কাপ কাঠ বাদাম ও কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন অল্প পানিতে। সকালে সেগুলো ফুলে উঠলে খেয়ে নিন। সকাল শুরু করুন বাদাম ও কিসমিসের সাথে। বাচ্চাদের জন্যও এটা খুব ভালো একটা খাবার।

খাবারের পরিমাণ বাড়ান-
খাবারের পরিমাণ বাড়ানো মানেই হাপুস হুপুশ করে একগাদা খেয়ে ফেলা নয়। আর সেটা সম্ভবও নয়। আপনি যদি কম খাওয়ার কারণে রোগা হয়ে থাকেন, তাহলে খাবারের পরিমাণ আপনাকে বাড়াতেই হবে। স্বাভাবিকভাবে যা খেয়ে থাকেন, তার ৪ ভাগের ১ভাগ পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খান প্রতিদিন।

বারবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন-
অনেকেই ভাবেন যে বারবার খেলে বুঝি ওজন বাড়বে। এটা মোটেও সঠিক না। বরং নিয়ম মেনে পেট পুরে খান। পেট পুরে খাওয়া হলে মেটাবলিজম হার কমে যায়, ফলে খাবারের ক্যালোরির অনেকটাই বাড়তি ওজন হয়ে শরীরে জমবে। অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াটা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, ফলে ওজন কমে।

খাদ্য তালিকায় রাখুন ডুবো তেলে ভাজা খাবার-
ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। ফলে সেটা ওজন বাড়াতে সহায়ক। তবে সাথে রাখুন প্রচুর তাজা শাক সবজির সালাদ।

জিমে যাওয়া অভ্যাস করুন-
ভ্রু কুঁচকে গেলো পড়ে? ভাবছেন জিমে মানুষ যায় ওজন কমাতে, বাড়ানোর জন্য কেন যাবেন? কিন্তু আসল কথাটা হলো, কেবল মোটা হলেই হবে না। সাথে তৈরি করতে হবে সুগঠিত শরীর। আপনি জিমে যাবেন পেশী তৈরি করতে, এবং পুরুষেরা ওজন বাড়াতে চাইলে এই জিমে যাওয়া আসলে খুবই ফলদায়ক। পেশীর ওজন চর্বির চাইতে অনেক বেশী তো বটেই, তাছাড়া ব্যায়ামের ফলে খিদেও পাবে আর মন ভরে খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ট্রেইনারের নির্দেশনা মাফিক ব্যায়াম করতে হবে। নাহলে হিতে বিপরীত হবার আশংকা।

পড়ুন  যারা উচ্চতা অনুযায়ী অনেক চিকন ও ওজন কম তাদের জন্য ওজন বৃদ্ধির উপায়

খান “বসা” ভাত-
“বসা” ভাত বলতে বোঝায় যে ভাতে মাড় ফেলা হয় না। মাড় ফেলে দিয়ে ভাতের স্টার্চের অনেকটাই চলে যায় মাড়ের সাথে। ওজন বাড়াতে চাইলে এই মাড় না ফেলাই ভালো। এর ফলে ভীষণ উপকার হবে ওজন বাড়াতে। আতপ চাল বা পোলাও চালের বসা ভাত মজাও লাগবে খেতে।

ঘুমাবার ঠিক আগেই দুধ ও মধু-
ওজন বাড়াবার জন্য একটা একটা অব্যর্থ কৌশল। রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই বেশ পুষ্টিকর কিছু খাবেন। আর খিদে পেলে তো আয়েশ করে পেট পুরে খেয়ে নেবেন। আর সাথে সাথেই ঘুম। ফলে খাবারের ক্যালোরিটা খরচ হবার সময় পাবে না, বাড়তি ওজন হিশাবে জমবে শরীরে। ঘুমাবার আগে প্রতিদিন এক গ্লাস ঘন দুধের মাঝে বেশ অনেকটা মধু মিশিয়ে খেয়ে নিবেন।

কমান মেটাবলিজম হার-
মোটা হবার পেছনে যেমন ধীর গতির মেটাবলিজম দায়ী, তেমনি রুগ্ন স্বাস্থ্যের পেছনে দায়ী উচ্চ মেটাবলিজম হার। সুতরাং মোটা হতে গেলে প্রথমেই এই মেটাবলিজম হার কমাতে হবে। তাতে আপনি যে খাবারটা খাবেন, সেটা বাড়তি ওজন রূপে আপনার শরীরে জমার সুযোগ পাবে। মেটাবলিজম হার কম রাখার জন্য প্রতিবেলা খাবারের পর লম্বা সময় বিশ্রাম করুন। খাবার পর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা কোনও কাজ করবেন না।

পড়ুন  আপনার ওজন বাড়াতে পারে এই ২০টি খাদ্য

খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কিছু বিশেষ খাবার-
আপনার নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই কিছু উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার যোগ করতে হবে খাদ্য তালিকায়, নাহলে ওজন বাড়বে কেন? উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে এই খাবার গুলো খেতে পারেন অনায়াসে। যেমন- ঘি/ মাখন, ডিম, চিজ/ পনির, কোমল পানীয়, গরু-খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, মেয়নিজ ইত্যাদি।

খান প্রচুর শাক সবজি ও ফল-
ভাবছেন এগুলো তো ওজন কমাবার জন্য খাওয়া হয়, তাই না? ওজন বাড়াতেও কিন্তু আপনাকে সাহায্য করবে এই ফল আর সবজি। এমন অনেক ফল আর সবজি আছে যারা কিনা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত। যেমন- আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা ইত্যাদি। ফল ও সবজি খেলে স্বাস্থ্য জম্ন ভালো থাকবে, তেমনি ওজনও বাড়বে। যদি এইসব না করেও আপনার ওজন না বৃদ্ধি পায়, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কেননা কোনও সুপ্ত অসুখ থাকলেও তার ফলে রুগ্ন ও ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.