...

চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়

আজকের পোস্ট চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে। খাবারে অ্যালার্জি, নানা ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, পোকা মাকড়ের কামড়, চুলকানি, কুষ্ঠ রোগ, ঠান্ডা আবহাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে চর্মরোগ হতে পারে। আমরা জানি, ত্বকে কোনো সমস্যা হলে খুব সহজেই তা আমাদের চোখে পড়ে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। কেননা তা থেকে মুক্তির উপায়ও রয়েছে। আপনি ঘরোয়া উপায়েই এর স্থায়ী সমাধান পেতে পারেন।

ঘৃতকুমারী
ঘৃতকুমারীর একাধিক গুণ রয়েছে। ত্বকের যেকোনো সমস্যায় এর রস লাগান। সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

চর্মরোগ প্রতিরোধের উপায়
চর্মরোগ প্রতিরোধের উপায়

অলিভ অয়েল
শুষ্ক ত্বকে সমস্যা অনেক বেশি হয়। অলিভ অয়েলে থাকা ভিটামিন ত্বকে মিশে গিয়ে আর্দ্রতা বজায় রাখে। ফলে নিয়মিত মাখলে ত্বক ভালো থাকে।

পায়ের চর্মরোগ

পায়ের চর্মরোগ

বেকিং সোডা
বেকিং সোডা দিয়েও ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান সম্ভব। আক্রান্ত জায়গায় বেকিং সোডা লাগান। সঙ্গে সঙ্গে জ্বালাপোড়া ভাব ও চুলকানি কমে যাবে।

তুলসী
তুলসীর হাজারো গুণ রয়েছে। নানা ধরনের ক্ষত, লাল ছোপ, পোড়া, চুলকানিসহ ত্বকের যেকোনো সমস্যায় তুলসী পাতা বেটে রস লাগালে সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাওয়া যায়।

নিম
নিমে রয়েছে এমন উপাদান যা যেকোনো জ্বালাময়ী ভাব কমিয়ে দিতে সক্ষম। বিশেষ করে চুলকানি বা ত্বকের লাল ছোপ ইত্যাদি কমাতে নিমের পাতা বিশেষ কাজ করে।

পড়ুন  শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে যে ৭টি খাবার

নিচে আরোকিছু চর্মরোগ এবং তা দূর করার তথ্য দেওয়া হলোঃ-

ঘামাচি:
গরমের সময় ঘামাচি একটি সাধারণ সমস্যা। ঘামাচি সাধারণত তখনই হয় যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নীচে ঘাম আটকে যায়। এর ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়। কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়। ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে।

বিভিন্ন চর্মরোগের ছবি

বিভিন্ন চর্মরোগের ছবি

ব্রণ:
সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এই রোগটি দেখা দেয়। তাই একে টিনএজারদের রোগও বলা যেতে পারে। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত, ঝাল ও ভাজাপোড়া খাবারসহ চকলেট, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে। এছাড়া বেশি করে পানি ও শাক-সবজি খেতে হবে।
দাদ:
শরীরের যে-কোনো স্থান ফাংগাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে। এই আক্রমণ মাথার চামড়ায়, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে। এটা ছোয়াঁচে রোগ। আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়। মাথায় দাদ দেখতে গোলাকার হয় এবং আক্রান্ত স্থানে চুল কমে যায়। প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি৷ অনেক সময় ব্যবহৃত সাবান থেকেও দাদ হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে।

পড়ুন  হ্যান্ড স্যানিটাইজার কতক্ষণ পর্যন্ত জীবাণু থেকে সুরক্ষিত রাখে?

পাঁচড়া:
শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। পরিষ্কার কাপড়-চোপড় ব্যবহার ও নিয়মিত গোসল করলে খোসপাঁচড়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

একজিমা:
একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক রকম হয়। তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক, শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষণ। ডিটারজেন্ট, সাবান অথবা শ্যাম্পু থেকে একজিমার সংক্রমণ হতে পারে। অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়াও একজিমার কারণ।

সোরিয়াসিস:
সোরিয়াসিস ত্বকের একটি জটিল রোগ। তবে এটি কেবল ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও। যেমন সন্ধি, নখ ইত্যাদি। সাধারণত ত্বকের কোষস্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়। সোরিয়াসিসে এই কোষ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ত্বকের কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার জায়গাজুড়ে এই সমস্যা দেখা দেয়। রোগ যত পুরোনো হয়, ততই জটিল হতে থাকে। তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার আওতায় আসা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়। সোরিয়াসিস বংশগতভাবে হতে পারে।

পড়ুন  রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিন

আর্সেনিকের কারণে চর্মরোগ:
আর্সেনিক যুক্ত পানি খেলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ত্বকের গায়ে ছোট ছোট কালো দাগ কিংবা পুরো ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে, হাত ও নখের চামড়া শক্ত ও খসখসে হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন স্থানে সাদা-কালো দাগ দেখা দেয়াসহ হাত ও পায়ের তালুর চামড়ায় শক্ত গুটি বা গুটলি দেখা দিতে পারে। তবে চিন্তার বিষয় হলো, আর্সেনিক যুক্ত পানি পানের শেষ পরিণতি হতে পারে কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা লোপ পাওয়া; ত্বক, ফুসফুস ও মূত্রথলির ক্যানসার হওয়া; কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া ইত্যাদি।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.