‘চুল পড়ে (hair fall) যাচ্ছে’- এমন অভিযোগ পাওয়া যায় কমবেশি অনেকের কাছ থেকেই। খুশকি, আগা ফেটে যাওয়া, যত্নের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। চুল পড়া (hair fall) বন্ধ করতে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ অ্যালোভেরার হেয়ার প্যাক (hair pack)। চুল পড়া বন্ধ করার পাশাপাশি চুলে উজ্জ্বলতা নিয়ে আসবে এটি।
জেনে নিন কীভাবে অ্যালোভেরার হেয়ার প্যাক(hair pack) তৈরি ও ব্যবহার করবেন-
অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল সংগ্রহ করে চুল ও মাথার তালুতে লাগান। চক্রাকারে ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট। গরম তোয়ালে দিয়ে চুল জড়িয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলের খুশকি দূর করে চুল পড়া (hair fall) কমাবে এটি।
অ্যালোভেরা, অলিভ অয়েল ও ভিটামিন ই
এই হেয়ার প্যাকটি (hair pack)চুলের আগা ফাটা রোধে সাহায্য করবে। আধা কাপ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের জেল মেশান। মিশ্রণটি মৃদু আঁচে গরম করে নিন। ঠাণ্ডা হলে তুলার বল ভিজিয়ে মাথার তালু ও চুলে লাগান। চুল হালকা করে খোঁপা করে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ৪০ মিনিট পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।
অ্যালোভেরা ও লেবুর রস
চুলের অতিরিক্ত তেল দূর করে অ্যালোভেরা ও লেবুর হেয়ার প্যাক(hair pack)। ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান। ভেজা চুলে ও মাথার ত্বকে মিশ্রণটি লাগান। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা, পেঁয়াজের রস ও নারিকেল তেল
১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস ও আধা কাপ নারিকেল তেল মেশান। মৃদু আঁচে ১৫ মিনিট গরম করুন মিশ্রণটি। ভেজা চুলে চক্রাকারে ম্যাসাজ করুন এটি। সারারাত রেখে পরদিন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। এটি চুল পড়া (hair fall) কমানোর পাশাপাশি বাড়াবে চুলের বৃদ্ধি।
অ্যালোভেরা, ডিম (egg) ও দই
ভেঙে যাওয়া বিবর্ণ চুলের জন্য খুবই কার্যকর এই হেয়ার প্যাক(hair pack)। একটি পাত্রে ডিমের (egg) সাদা অংশ নিন। ১ টেবিল চামচ দই ও ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মেশান। মিশ্রণটি ভালো করে ফেটান। চুল সামান্য ভিজিয়ে হেয়ার প্যাকটি(hair pack) লাগান। ৪০ মিনিট পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন এটি।
লেবুর রস এবং মধু দিয়ে মেয়েদের যেকোন স্থানের লোম দূর করার উপায়
ওয়েক্সিং হলো শরীরের অবাঞ্ছিত পশম (hair) দূর করার একটি পদ্ধতি, যা পশমকে গোড়া থেকেই তুলে ফেলে। এই পদ্ধতিতে লোম দূর করলে অনেকদিন পর্যন্ত ত্বক লোমমুক্ত থাকে (প্রায় দুইমাস পর্যন্ত)। এটি ভ্রু, মুখমন্ডল, পিঠ, হাত-পায়ের ত্বক এবং গোপন স্থানের লোম দূর করতে কার্যকরী। ওয়েক্সিং এর সুবিধা হলো দীর্ঘ সময় পশম মুক্ত থাকা এবং অন্য পদ্ধতি অবলম্বনে ত্বকের রঙ কালো হয়ে যায়, ওয়েক্সিং এ তা হয় না। আর অসুবিধা হলো, এটি ব্যাথাদায়ক পদ্ধতি এবং পশমের (hair) আকৃতি খুব ছোটও হতে পারবে না আবার খুব বড়ও হতে পারবে না।
ওয়েক্সিং এর বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে স্ট্রিপ ওয়েক্সিং সবচেয়ে জনপ্রিয়। যদিও এটি সময়সাধ্য এবং বাইরে কোথাও করাতে গেলে অনেক খরচেরও ব্যাপার। কিন্তু সতর্কতার সাথে নিম্ন পদ্ধতিতে আপনি ঘরে বসেই লোম ওয়েক্সিং করতে পারেন।
বগল ও পেটের নিচের লোম দূর করার উপায়
তাহলে এতো ঝামেলায় না গিয়ে প্রাকৃতিক ভাবে বাসাতেই তৈরি করে নিন ওয়াক্স (waxing) এবং ত্বকের সুরক্ষায় নিজেই করে নিন ওয়াক্সিং খুব সহজে।
যা যা লাগবেঃ
১ কাপ (২৫০মি.লি.) চিনি
১ কাপ (২৫০মি.লি.) মধু
১/২ কাপ (১৫০মি.লি.)লেবুর রস
১ কাপ পানি
১ টি সুতি বা লিলেন কাপড়
পদ্ধতিঃ
চিনির সিরা তৈরী করুন
চিনির সিরা
একটি পাত্রে (সসপ্যান) পুরোটা চিনি যোগ করুন। এটি মাঝারি তাপে গরম করতে থাকুন। একটু পর পর কাপড় দিয়ে পাত্রটি ধরে নাড়তে হবে যতক্ষণ না চিনির সিরা তৈরী হবে। যখন চিনির সিরা তৈরী হয়ে যাবে তখন খুব সুন্দর ঘ্রান বের হবে। অর্থাৎ
* প্রথমে পানিতে চিনি নিয়ে চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। খুব বেশি নাড়ার প্রয়োজন নেই। দু একবার নেড়ে দিলেই হবে।
* চিনি গলে পানিতে মিশে গিয়ে চিনি ক্যারামেলাইজ হওয়া পর্যন্ত চুলায় রেখে জ্বাল দিয়ে থাকুন।
লেবুর রস এবং মধু যোগ করুন
লেবুর রস এবং মধু
চিনির সিরা হয়ে এলে এর মধ্যে মধু এবং লেবুর রস যোগ করুন। লেবুর রস যোগ করার সময় গরম ফেনা তৈরী হবে, এক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। একটি কাঠের চামচ দিয়ে মিশ্রণটি নাড়তে থাকুন। মিশ্রণটি ঘন আঠালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, এক চা চামচ পানি যোগ করুন। অর্থাৎ
আরও পড়ুনঃ সন্তান ধারণে সক্ষমতা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক নারী অবশ্যই এই কাজগুলো করুন
*চিনি ক্যারামেলাইজ হয়ে এলে এতে মধু ও লেবুর রস দিয়ে সাবধানে নাড়বেন। কারণ মধু অনেক বেশি ফেনায়িত হয় এবং অনেক বেশি গরম হয়ে যায়। সুতরাং সাবধানে থাকবেন যেন শরীরে গরম মধু না পড়ে।
*মিশ্রণটাকে খুব বেশি আঠালো মনে হলে এতে ১ টেবিল চামচ পানি দিয়ে দিন। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
* মিশ্রণটি ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা হতে দিন।
আপনার লোমের আকার দেখে নিন
আপনি যেই স্থানের লোম দূর করবেন, সেখানে পশমের (hair)দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ০.১৫ থেকে ০.২৫ ইঞ্চি হতে হবে।
যদি আপনার পশম খুব ছোট হয়, তাহলে ওয়েক্সিং করে এটি গোড়া থেকে তোলা যাবেনা।
যদি আপনার লোম খুব বড় হয়, তাহলে আপনি প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করতে পারেন।
* লম্বা করে সুবিধাজনক দৈর্ঘ্যের সুতি বা লিলেন এর কাপড় টুকরো করে কেটে নিন। কাপড়ের টুকরোর চারিধার একটু সেলাই করে নিলে ভালো হয়।
লোম তোলার স্থানে পাউডার দিয়ে শুষ্ক করে নিন
* যেখানের লোম তুলবেন সেখানে বেবি পাউডার ছড়িয়ে নিন। এতে ময়েসচারাইজার এবং তেল শুষে নেবে। অর্থাৎ লোম তোলার স্থানটি একটু বেবি পাউডার দিয়ে শুষ্ক করে নিন, এতে ওয়েক্সিং করার সময় আপনার ত্বকে ব্যাথা কম অনুভূত হবে।
* মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হলে ফ্রিজ থেকে বের করে নিয়ে একটি কাঠের চ্যাপ্টা চামচের সাহায্যে তা লোমের ওপর লাগিয়ে নিন। চামড়ায় নয় যতোটা সম্ভব লোমে লাগানোর চেষ্টা করবেন। বা একটি চামচ দিয়ে ওয়েক্সিং এর মিশ্রণটি পশমযুক্ত (hair) ত্বকে প্রয়োগ করুন। পশমের গোড়া থেকে উপরের দিকে টেনে টেনে মিশ্রণযোগ করতে হবে।
কাপড়ের টুকরো ত্বকের উপর রাখুন
ওয়েক্সিং মিশ্রণের উপর কাপড়ের টুকরো ভালভাবে চেপে রাখুন। এখন আপনাকে মিশ্রণটি শুকিয়ে লোমের সাথে আঠালো ভাবে লেগে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ
* মিশ্রণটি লাগিয়ে এর ওপর কাপড়টি রেখে চাপ দিয়ে রেখে দিন। ২/৩ মিনিট রেখে কাপড়টি হেঁচকা টানে লোমের বিপরীতে টান দিয়ে খুব দ্রুত তুলে নিন।
আরও পড়ুনঃ ভয়ংকর জরায়ুর ক্যান্সারের কিছু দৈনন্দিন উপসর্গ
* এভাবে সব লোম তুলতে পারবেন।
সতর্কতাঃ
লোম একেবারে ছোট এবং খুব বড় হলে এই ওয়াক্সটি (waxing) ঠিক মতো কাজ করতে নাও পারে। তবে এই ওয়াক্সিং (waxing) ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয় মোটেই।
পশম (hair)তোলা স্থানের যত্ন নিন
লোম তোলার পর ঐ স্থানের ত্বকটি লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে। সেজন্য ঐ স্থানে বরফ ঘষুন। একটু আফটার সেভ লোশন বা কুলিং ক্রিম অথবা সেভলন দিলেও উপকার পাবেন।
যেটুকু ওয়েক্সিং মিশ্রণ অবশিষ্ট রয়ে যাবে তা রেফ্রিজারে কয়েক সপ্তাহ এবং ডিপ ফ্রিজারে কয়েক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। ব্যবহারের আগে গরম করে মিশ্রণটি আঠালো করে নিলেই হবে।
মনে রাখবেন ওয়েক্সিং একটি ব্যাথাদায়ক পদ্ধতি। যতো নিখুত ও সতর্কভাবে এটি করবেন ব্যাথা ততো কম অনুভূত হবে।