...

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন

রোগ হলে সুস্থ হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন করতে হয়। কোনো ওষুধই নিজে নিজে খাওয়া ঠিক নয়। সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করা জরুরি। তবে ওষুধ খাওয়ার সময় কিছু ভুলের কারণে এর সম্পূর্ণ উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হই আমরা। এসব ভুল পরবর্তীকালে শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। জেনে নিন ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন সম্পর্কে।ওষুধ খাওয়ার নিয়ম

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন

১. ডোজ বাদ দিই
অনেক সময় ওষুধ সেবন শুরুর পর একটু ভালো হয়ে গেলে ওষুধ খাওয়া বাদ দিয়ে দিই অথবা ওষুধ খাওয়ার প্রতি অতটা মনোযোগ দিই না। এটি পরবর্তী সময়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই ওষুধের ডোজ শেষ করতে হবে।

২. অ্যান্টাসিড গ্রহণের সময়
অনেকে অ্যান্টাসিড গ্রহণের বিষয়ে ভুল করে থাকেন। সব ওষুধের সঙ্গে একত্রে অ্যান্টাসিড খান, যেটি ঠিক নয়। অ্যান্টাসিড অন্যান্য ওষুধের প্রভাবকে নষ্ট করে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে বা এক ঘণ্টা পরে অ্যান্টাসিড গ্রহণ করুন।

৩. একসঙ্গে বিভিন্ন ওষুধ খাওয়া
চিকিৎসককে দেখাতে গেলে আগে কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কি না, সেটি জানিয়ে দিন। আর সেই ওষুধ এখন চালানো যাবে কি না, সেটিও জেনে নিন। কেননা, কখনো কখনো একটি ওষুধ আরেকটি ওষুধের প্রভাবকে কমিয়ে দেয় বা বাড়িয়ে দেয়। একে বলে মিথস্ক্রিয়া (ইন্টারঅ্যাকশন)। এটি কখনো কখনো খুব বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পড়ুন  ১ মিনিটে মন ভালো করার ৫টি উপায় জেনে নিন

৪. ঘড়ি ধরে ওষুধ
ওষুধ সেবনের জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধ খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় তৈরি করে নিন; প্রতিদিন সে অনুযায়ী ওষুধ খান। যেমন : যদি কোনো ওষুধ আগের দিন সকালে খান, পরের দিন যেন সেটি খেতে খেতে বিকেল না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। নির্দিষ্ট সময় মেনে ওষুধ খেলে ওষুধের গুণাগুণ পুরোপুরি পাওয়া যায়।

৫. দুধ
দুধের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম। এ কারণে এটি অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। এটি ওষুধকে অকার্যকর করে ফেলতে পারে। তাই ওষুধ গ্রহণের সময় চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন, দুধ খেতে কোনো অসুবিধা রয়েছে কি না।

৬. ধূমপান
আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ধূমপান করেন, তাহলে ওষুধের ভালো প্রভাব আপনি তেমন পাবেন না। ধূমপান ওষুধের ভালো প্রভাবকে কমিয়ে দেয়। যখন ওষুধ খাচ্ছেন, চেষ্টা করুন ধূমপান না করতে।

৭. খাবার
খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওষুধ খেয়ে নেবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খাবার খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট আগে বা পরে ওষুধ খান। এ ছাড়া কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলো খালি পেটে খেতে হয়। এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পড়ুন  অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে প্রাকৃতিক যে ৫টি উপাদান

৮. অ্যালার্জি
অনেক ওষুধ রয়েছে, যেগুলো খাওয়ার পর অ্যালার্জির সমস্যা হয়। আপনার যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, তবে সতর্ক হয়ে ওষুধ খান এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না বা শুরু করবেন না।

৯. চা-কফি
আপনি কি ওষুধ খাওয়ার সময় চা-কফি খান? যদি এমন হয়, তবে ওষুধ খাওয়ার সময় চা কফি খাবেন না। এটি ওষুধের ভালো প্রভাবকে নষ্ট করে দিতে পারে। ওষুধ খাওয়ার আগে বা পরে চা কফি খান।

১০. মদ্যপান
কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলো খাওয়াকালীন মদ্যপান করলে শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ওষুধ ও অ্যালকোহল আপনার জীবনকে ঝুঁকির মধ্যেও ফেলে দিতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার সময় এ বিষয়টি খেয়াল রাখুন।

১১. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী
যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী হন এবং ওষুধ খান, তবে খাবার বাদ দেবেন না। খাবার এবং ওষুধের সময় কখন হওয়া উচিত, এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিলেই ভালো হয়।

১২. ব্র্যান্ডের বিষয়ে
যদি একই ব্র্যান্ডের ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে খেয়ে থাকেন, তাহলে সেই ব্র্যান্ডের ওষুধই পরবর্তী সময়ে খাওয়া ভালো। আপনার শরীর সেই ব্র্যান্ডের ওষুধের ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া দেবে। তবে এ বিষয়ে শরীরের অবস্থা বুঝে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেলেই সবচেয়ে ভালো।

পড়ুন  ওষুধ খাওয়ার নিয়ম -কানুন জেনে নিন

১৩. ওষুধ খাওয়ার পর গাড়ি চালানো
কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলো খেলে বমি হয়, উদ্বেগ তৈরি হয় বা ত্বকে অ্যালার্জি হয়। এ ধরনের ওষুধ খাওয়ার পর গাড়ি চালানো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

১৪. কোমল পানীয় এবং ফলের রস
ওষুধ খাওয়ার সময় কোমল পানীয় বা ফলের রস খেতে পারবেন কি না, সেটি চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন। কিছু কোমল পানীয় রয়েছে, যেগুলো ওষুধের প্রভাবকে কমিয়ে দিতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, ওষুধ সেবনের সময় এসব পানীয় এড়িয়ে গেলে।

১৫. গর্ভাবস্থায়
গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ওষুধ সেবন করবেন না। এ সময়ে যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

১৬. শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়
যেসব মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, তারও ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এ সময় বিভিন্ন ওষুধ খেলে শিশুর শরীরে সমস্যা হতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসককে আপনার এবং শিশুর শরীরের অবস্থা ভালোভাবে জানান।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.