...

পায়খানা জনিত সমস্যা

খাদ্যাভ্যাসের কারণে পশ্চিমাদের চেয়ে আমাদের বাহ্য ত্যাগের অভ্যাস স্বাস্থ্যসম্মত। আমরা প্রচুর ভাত ও আঁশযুক্ত খাবার খাই। তাই প্রেসক্রিপশনে প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার খাবেন; এটি উল্লেখ করার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। আমরা সাধারণত দৈনিক দু’একবার বাহ্য ত্যাগ করি। মলে পিচ্ছিল জাতীয় যৎসামান্য আম (!) থাকা যে স্বাভাবিক- এটা অনেকেই মানতে পারেন না। এটাকে ক্রনিক ডিসেন্ট্রি বা আমাশয় ভেবে সুস্থ মানুষও ডাক্তার, কবিরাজ, বৈদ্য সবার কাছে ধর্ণা দেন। সপ্তাহে ২-৪ বার পায়খানা হলে তা স্বাভাবিক।

পায়খানা

পায়খানা জনিত সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ

এর কম হলে চিকিৎসা নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। পায়খানা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ২-৪ বার কম-বেশি হলে কিংবা নরম বা শক্ত হলেই ঔষধ খেতে হবে এটা বিজ্ঞানসম্মত নয়। পায়খানা করে পেট খালি হয়নি, Incomplete sense of evacuationGK কোষ্ঠকাঠিন্য ভেবে ল্যাগজেটিভ বা মল নরম করার ওষুধ খেলে লাভ হয় না। খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। অন্ত্রের স্নায়ুবিক বৈকল্য বা আইবিএস বা কোষ্ঠকাঠিন্য চিকিৎসায় এর নিরাময় নেই। নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মেট্রোনিডাজল গ্র“পের ওষুধ কিংবা এন্টিবায়োটিকস্ না খেয়ে ২-১ বেলা, ২-১ দিন, ২-৪টা ফ্ল্যাজিল/ফিলসেট জাতীয় ওষুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোন খাবার না খেলে বাহ্য ভালো থাকে, শুধু সেটাই পরিত্যাজ্য। অযথা মাছ ভাত গোশত- খাওয়া বাদ দিয়ে নিজেকে বঞ্চিত করবেন কেন? দুধের ব্যাপারেও আমাদের ভুল ধারণা আছে। দুধ আদর্শ খাদ্য, তাই দুধ খেতেই হবে এটা যেমন ভুল, দুধ খেলেই ডায়রিয়া হয় এটাও সত্য নয়। দাঁত গজাবার আগে শিশুদের একমাত্র খাদ্য দুধ, তবে বেশিদিন সব খাদ্যপ্রাণ এ দুধ দিতে পারে না। ছয় মাস পর থেকে শিশুকে দুধের সঙ্গে সঙ্গে অন্য পুষ্টিকর খাবার যেমন- মাছ, ভাত, ডিম, গোশত দিতে হয়। আবার দাঁত পড়ে যাওয়ার পর বৃদ্ধ বয়সেও পরিমাণমতো দুধ খেলে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়। স্তন্যপায়ী কোনো প্রাণী দাঁত গজাবার পর দুধ পান করে না। তাই বলে প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ, ভাল্লুক, সিংহরা কি দুর্বল? দুধ প্রাপ্তবয়সে মাছ মাংস ভাত রুটি থেকে কিছুতেই বেশি পুষ্টিকর নয়, দুধ শিশুদের জন্যই আদর্শ খাদ্য।

পড়ুন  পেট খারাপ ঠেকানোর ঘরোয়া পদ্ধতি

ধাতু দূর্বলতা কি? পায়খানা ও প্রসাব করার সময় ধাতু আসলে কি করব? জেনে নিন বিস্তারিত

যদি কখনও আলকাতরার মতো কালো নরম আর আঁঠালো বাহ্য ত্যাগ করেন; তবে তা আইবিএস-এর নরম বা কম বাহ্য ত্যাগের চেয়ে অনেক বেশি প্রাণহানিকর। এটা পাকস্থলী কিংবা খাদ্য অন্ত্রের প্রথমভাগে রক্তক্ষরণের কারণে হয়। এটা অনেক বেশি গুরুতর। এমন হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ কিংবা অনেক বেশিবার, কঠিন ও সপ্তাহে একবারও বাহ্য না হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কলেরার মতো চাল ধোয়া পানি বা বারবার নরম ও রক্তমিশ্রিত পায়খানা হলেও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পায়খানা কষা হয়,সমাধান কি? জেনে নিন

ডায়রিয়া, আম-আমাশয় বা রক্ত-আমাশয় ভিন্ন ভিন্ন রোগের চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন। বৃহদান্ত্রে পলিপ বা ক্যান্সার গুরুতর অসুখ, এ জন্য অনেক সময় বৃহদান্ত্রে দেখার জন্য কোলনসকোপি করানো আবশ্যক। শক্ত বা কঠিন পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত গুরুতর অসুখ না হলেও অর্শজাতীয় অসুখ হতে পারে। মনে রাখবেন, দৈনিক ২-১ বার পায়খানা না হলে ক্ষতি নেই, তবে মাত্র ১২-২৪ ঘণ্টা প্রস্রাব বন্ধ থাকলে বুঝতে হবে প্রাণ হরণকারী কিডনি বিকলতা দেখা দিয়েছে। বাহ্য নিয়ে আমরা যথেষ্ট উদ্বেগ বোধ করলেও প্রস্রাবের দিকে লক্ষ্য রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

পড়ুন  সঙ্গমের পর রক্তপাত সার্ভিক্যাল ক্যানসার নয়তো?

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.