...

কোলন ক্যান্সারের এই লক্ষণগুলো আপনি অবহেলা করছেন না তো?

কোলন ক্যান্সার একটি নীরব ঘাতক। লক্ষণ দেখা দেবার আগে বেশীরভাগ মানুষই লক্ষ্য করেন না যে তিনি অসুস্থ। আর লক্ষণ যখন ধরা পড়ে ততদিনে নিরাময় করাটা অনেক জটিল ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। রোগের প্রথম পর্যায়ে সাধারণত লক্ষণ চোখে পড়ে না, পড়লেও সেগুলোকে আমরা সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাই, এর পেছনে গুরুতর কোনো রোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে যাই না।কোলন ক্যান্সার

কোলন ক্যান্সারের এই লক্ষণগুলো আপনি অবহেলা করছেন না তো?

ওবেসিটি, ধূমপান, শরীরচর্চা না করা, বেশি রেড মিট খাওয়া, পারিবারিক ইতিহাস, টাইপ টু ডায়াবেটিস এগুলো থাকলে আপনার কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি বলে ধরা যেতে পারে। জেনে নিন কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু লক্ষণের কথা।

১) অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা
রক্তশূন্যতা ধরা পড়ার মানে এই যে আপনার অভ্যন্তরীণ কোনো অঙ্গ থেকে হয়তো রক্তক্ষরণ হচ্ছে, যদিও আপনি তা বুঝতে পারছেন না। যদি অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে ঋতুস্রাব চলাকালীন নারীর শরীরে, তাহলে সাধারণত অন্য কোনও কারণ খুঁজতে যায় না কেউ। আর যদি একজন পুরুষের মাঝে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় তাহলে সাধারণত ধরে নেওয়া হয় শরীরে কোনো সমস্যা আছে। অনেক সময়ে মাসের পর মাস শরীরে আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হবার পরেও তা মলে খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনার যদি অ্যানিমিয়ার লক্ষণগুলো চোখে পড়ে যেমন ক্লান্তি এবং মাথা ঘোরা, তাহলে দ্রুত ডাক্তার দেখান।

পড়ুন  গরমে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কিছু টিপস

২) আপনি সহজেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন
আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের আরেকটি লক্ষণ হল সহজই দম ফুরিয়ে যাওয়া। কারণ এমনভাবে অ্যানিমিয়া তৈরি হলে আমাদের শরীর বেশি করে প্লাজমা বা রক্তরস, উৎপাদন করে, কিন্তু সে পরিমাণে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করে না। ফলে আমাদের রক্ত কম পরিমাণে অক্সিজেন বহন করতে পারে এবং আমরা অক্সিজেনের কমতিতে ভুগে সহজে হাঁপিয়ে যাই।

৩) পেট ফাঁপা অথবা পেট ব্যথা
কোলনে খাবারের বর্জ্য আটকে যেতে শুরু করলে পেট ফেঁপে যাবে অবধারিতভাবেই। এছাড়াও পেটে ব্যথা হতে পারে। পেট ফাঁপা ও ব্যথার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তারপরেও এসব উপসর্গ অনেকদিন ধরে দেখলে ডাক্তার দেখানোই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি পেটের ডান দিকে সবসময় ব্যথা লক্ষ্য করেন, তাহলে এমনও হতে পারে যে রোগটি প্রাথমিক পর্যায় পার হয়ে আরও খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে এবং লিভারে ছড়িয়ে গেছে।

৪) আপনি প্রচন্ড কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন
মাঝে মাঝে সবারই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে, তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। বেশি করে ফাইবার জাতীয় খাবার খেলেই তা আবার ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু এটা যদি খুব বেড়ে যায় এবং কিছুতেই এই অবস্থার উন্নতি করা না যায় তাহলে চিন্তিত হবার কারণ আছে বই কী। এই সমস্যার কারণ হতে পারে আপনার কোলনে থাকা কোনো প্রতিবন্ধকতা। তাই এই সমস্যা বেশিদিন থাকলে আপনার উচিৎ ভালো করে চেক করিয়ে নেওয়া।

পড়ুন  আপনার ওজন কমাতে পারে যে ৭টি খাবার

৫) মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন
কোষ্ঠকাঠিন্য ছাড়াও ডায়ারিয়া, মলের আকৃতিতে পরিবর্তন, কালচে রঙের মলত্যাগ এগুলো লক্ষ্য করুন। তিন সপ্তাহ বা ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বজায় থাকলে এগুলো হতে পারে কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ। মলে রক্ত থাকলে তার রং লাল বোঝা নাও যেতে পারে। এ কারণে কালচে মলের ব্যাপারে সাবধান থাকা জরুরী। আর আপনার মল যদি আগের চাইতে চিকন আকৃতি ধারণ করে তাহলে এমন হতে পারে যে কোলনে পলিপ তৈরি হয়েছে এবং মলত্যাগের রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই সংকোচ না করে ডাক্তারকে খুলে বলুন।

৬) অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস
ব্যায়াম বা খাদ্যভ্যাসজনিত কোনো কারণ ছাড়াই যদি আপনার ওজন অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকে তবে সেটা যে কোনো ক্যান্সারের একটি নীরব লক্ষণ। কোলনে কোনো টিউমার থাকলে সেটা মেটাবলিজম বাড়ানোর কিছু রাসায়নিক নিঃসরণ করবে এবং ওজন হ্রাস পায় তার ফলে। এছাড়াও রুচি হ্রাস পাবার কারণে ওজন কমতে পারে। এ কারণে অকারণে ওজন কমলে খুশি হবার কিছু নেই।

প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে অনেকটাই নিরাময়যোগ্য হতে পারে কোলন ক্যান্সার। এ কারণে বিলম্ব না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কোলন ক্যান্সারের মতো খারাপ কিছু না হয়ে আরও কম ক্ষতিকর কোনো রোগ হতে পারে। কিন্তু সাবধানের মার নেই, এটা তো আমরা সবাই জানি, তাই না?

পড়ুন  গর্ভকালীন সময়ে যে ছোটখাটো লক্ষণগুলো হতে পারে বিপদজনক

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.