প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর বয়সের পর প্রত্যেক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে পারবেন। সব মানুষেরই রক্ত দেয়া উচিত। রক্ত দিলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু একজন বিপদাপন্ন রোগীর জীবন বাঁচতে পারে। তবে রক্ত দেয়ার আগে ও পরে রক্তদাতাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে। এই নিয়ম মানতে হবে রক্তদাতার শরীর ও স্বাস্থ ঠিক রাখার জন্য। জেনে নিন কি কি কাজ তাকে করতে হবে।
রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে কি করবেন জেনে নিন
রক্ত দেয়ার আগে করণীয়ঃ
⇒ আপনি যদি কোনো কারণে অসুস্থবোধ করে তবে সেদিনের মতো রক্ত দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
⇒ রক্ত দেয়ার পূর্বে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে নিন, কিন্তু তৈলাক্ত কিছু খাবেন না।
⇒ রক্তদানের পূর্বে আপনি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন তরমুজ, পালং অথবা আয়রন সমৃদ্ধ অন্যান্য শাকসবজি ইত্যাদি খেতে পারেন।
⇒ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন জুস, আমলকি বা অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাবেন।
⇒ রক্তদানের পূর্বে প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানি জাতীয় খাবার খাবেন। সকাল থেকে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। পারলে ডাবের পানি খাবেন বেশী করে।
⇒ রক্তদানের পূর্ব মুহুর্তে পানি পরিবর্তে সফট ড্রিঙ্কস অথবা জুস পরিহার করুন।
⇒ রক্তদানের অন্তত ২৪ ঘন্টা পূর্বে সকল ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করুন।
⇒ সর্বপরি রক্ত প্রদানের পূর্বে স্বাস্থসম্মত খাবার খাবেন যাতে আপনার রক্তের সুগার এর লেভেল ঠিক থাকে।
⇒ যেদিন রক্ত দেবেন তার আগের রাতে অনেকটা সময় ভালো করে ঘুমিয়ে নেবেন।
⇒ মনে রাখতে হবে, বিগত দুই দিনের মধ্যে এসপিরিন নিয়েছেন কিনা। নিয়ে থাকলে ডোনেশন না করাই উত্তম।
রক্তদানের পরে করণীয়ঃ
⇒ অনেকটা সময় শুয়ে থাকবেন। হুট করে উঠে বসবেন না বা উঠে দাঁড়াবেন না।
⇒ রক্তদান পরবর্তী ৫ ঘন্টা ভারী ও শ্রমসাধ্য কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
⇒ প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। এই ব্যাপারে অবহেলা করবেন না মোটেও।
⇒ আয়রন, ফোলাইট, রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লাল মাংস, মাছ, ডিম, কিশমিশ, কলা, আলু, বাদাম ইত্যাদি ধরণের খাবার খাবেন, যা আপনার শরীরের রক্তের কোষগুলোকে সুস্থভাবে পরিপূর্ণ হতে সাহায্য করবে।
⇒ ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লিভার, শাকসবজি ইত্যাদি খান, যা আপনার শরীরের রক্তের কোষগুলো নতুনভাবে উৎপন্ন করতে সহায়তা করবে। আইরন ও ভিটামিন B2 সমৃদ্ধ খাবার যেমন- বাদাম, শাকসব্জি, মটর, ডিম, দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরী খাবার ইত্যাদি খান, যা আপনার শরীরে শক্তি যোগাবে।
⇒ কয়েক ঘণ্টার জন্য শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন এবং বেশ কিছুদিন সাধারণ সময়ের তুলনায় একটু কম পরিশ্রম করে বিশ্রাম নিন।
⇒ রক্ত প্রদানের পর দুই দিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন যা আপনার শরীরে ফ্লুইড সরবরাহ নিশ্চিত করবে এবং নিম্ন রক্তচাপ প্রতিহত করবে।
⇒ রক্তদানের ৩ মাস পর নতুন করে রক্ত দিতে পারবেন। এর আগে পুনরায় রক্ত দেবেন না।
⇒ সর্বোপরি রক্ত প্রদানের পূর্বে বিশেষ করে রক্ত প্রদানের পর আপনাকে একটা ব্যালান্সড খাবারের তালিকা তৈরী করে নিতে হবে যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখবে।