...

জেনে নিন ডায়াবেটিস নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারনা সম্পর্কে

খুব পরিচিত একটি অসুখ হল ডায়াবেটিস। প্রতি ১০ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে গড়ে ৫ জনের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। কিন্তু এই অসুখটি নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই কিছু প্রচলিত ভুল ধারনা আছে যার আসলে বাস্তব কোনো অর্থ নেই। চলুন তাহলে জেনে নিই ডায়াবেটিস নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারনা ও এর বাস্তব সত্য সম্পর্কে।ডায়াবেটিস

জেনে নিন ডায়াবেটিস নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারনা সম্পর্কে

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
চিনি বেশি খেলে ডায়াবেটিস হয়।

বাস্তব সত্যঃ
না এটি সত্য নয়। জিনগত এবং কিছু অজানা প্রভাবক টাইপ-১ ডায়বেটিসের কারণ। টাইপ-২ ডায়বেটিসের কারণ জিনগত এবং জীবনযাত্রার ধরন। ওজন বেশি হলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ে এবং বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার, তা চিনি বা চর্বি যেখান থেকেই আসুক না কেন, ওজন বাড়ায়। কারো যদি ডায়বেটিসের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তবে তার উচিত হবে স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন ঠিক রাখা।

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
শুধু বেশি ওজনের বা মোটা মানুষই ডায়বেটিসে আক্রান্ত হয়।

বাস্তব সত্যঃ
মাত্রাতিরিক্ত ওজন ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার একটি ঝুঁকি মাত্র। এক্ষেত্রে অন্যান্য ঝুঁকি, যেমন পারিবারিক ইতিহাস, জাতিস্বত্বা, বয়স ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার জন্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকেই এই ধারনা পোষণ করেন যে, বেশি ওজনই ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার একমাত্র ঝুঁকি। অনেক মোটা মানুষেরই ডায়াবেটিস নেই। আবার অনেক ডায়বেটিস রোগীর ওজন স্বাভাবিক এমনকি স্বাভাবিকের চেয়েও কম।

পড়ুন  ডায়াবেটিস-কে ভয় নয় জয় করতে হয়

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ ডায়াবেটিক খাবার খেতে হয়।

বাস্তব সত্যঃ
ডায়াবেটিক রোগীদের ও একটি সুস্থ মানুষের খাবার তালিকার মধ্যে তেমন কোন অমিল নেই। কম চর্বি, পরিমিত লবন আর চিনি এর পূর্ণদানাযুক্ত খাদ্য, শাকসবজি ও ফলমূল এগুলোর মিশ্রণই হতে পারে আদর্শ খাবার। তথাকথিত ডায়াবেটিক খাবারে অতিরিক্ত কোন উপকার পাওয়া যায়না।

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
ডায়াবেটিক রোগী মিষ্টি জাতীয় কোন কিছু বা চকলেট খেতে পারবেনা।

বাস্তব সত্যঃ
যদি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য তালিকার সাথে উপযুক্ত শরীরচর্চার যোগ ঘটানো যায়, তবে ডায়াবেটিক রোগীরাও মিষ্টি জাতীয় খাবার ও ফলাহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক রোগী ও সুস্থ মানুষের মধ্যে কোন সীমারেখা নেই। মিষ্টি জাতীয় খাবার একদম বাদ দেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই, শুধু পরিমান সীমার মধ্যে থাকা চাই। মিষ্টিজাতীয় খাবারে যে শুধু ক্যালরিই থাকে তা নয়, এতে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে যা রক্তের গ্লুকোজের পরিমান বাড়িয়ে দিতে পারে। রক্তের গ্লুকোজের পরিমান ঠিক রাখতে শুধু কম শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার পরই ফলাহার করা উচিত।

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
ফল স্বাস্থ্যকর খাদ্য, তাই যত ইচ্ছা ফল খাওয়া যেতে পারে।

পড়ুন  ওজন বাড়াতে সহজ ঘরোয়া কিছু উপায়

বাস্তব সত্যঃ
ফল অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্য। এতে আঁশ ছাড়াও প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। কিন্তু ফলে শর্করাও থাকে যাকে অবশ্যই খাদ্য তালিকার সাথে সমন্বয় করতে হবে। প্রয়োজনে ডায়েটিশিয়ানের সাথে আলাপ করে ঠিক করুন কোন ফল কতবার কী পরিমানে খেতে পারেন।

প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
আপনার অতি সামান্য বা অল্প পরিমানে ডায়াবেটিক থাকতে পারে।

বাস্তব সত্যঃ
সামান্য পরিমান ডায়াবেটিস বলে কোন কথা নেই। হয় আপনার ডায়াবেটিস আছে অথবা নেই, এর মাঝামাঝি কিছু নেই।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.