...

ব্যায়াম করার সঠিক সময় কখন?

স্বাভাবিকভাবে দিনের যেকোনো সময়েই ব্যায়াম করার সুফলতা পাওয়া যায়। তবে অনেকের মতে সকালে এটি বেশি কার্যকর হয়ে থাকে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় দেখা যায় যেকোনো সময়ের শারীরিক ব্যায়ামই ভালো ফলাফল দিতে সহায়ক। তবে ব্যস্ত জীবনের সাথে মিলিয়ে আপনি এর জন্য একটি রুটিন করে নিতে পারেন। তবে ভোরবেলা কিংবা দুপুরবেলা, বিকাল কিংবা সন্ধ্যা যে সময়ই ব্যায়াম করুন না কেন সময়ভেদে ব্যায়ামের ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আসে। জেনে নিন ব্যায়ামের সঠিক সময়-ব্যায়াম

ব্যায়াম করার সঠিক সময় কখন?

ভোরবেলা:
১) যেহেতু ব্যায়াম করার সময় শরীরে যথেষ্ট পজিটিভ এনার্জি রাখতে হবে। সেই সাথে মনঃসংযোগ করতে হবে, সে কারনে ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করা শুরু করবেন না।

২) ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরটাকে একটিভ হওয়ার জন্য অন্তত তিন ঘন্টা সময় দিন। শরীরের এনার্জি লেভেল স্বাভাবিক অবস্থায় পৌছালে তবেই ব্যায়াম করা শুরু করবেন।

৩) সময়ের অভাবে যদি ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠার আধ ঘন্টা পরই শরীরচর্চা করতে হয় তাহলে হালকা জগিং করতে পারেন। হালকা করে ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ ও হাঁটাচলা করতে পারেন।

পড়ুন  কেগেল ব্যায়াম করলে কি বীর্যপাত বিলম্বিত করা যায়?

৪) ভোরবেলা ব্যায়াম করার পরিকল্পনা থাকলে আগের দিনের সব কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান। ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর পর নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করে ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। যদি কোন দিন ঘুমাতে যেতে দেরি হয়ে যায় তবে ঘুম থেকে উঠেই আগের নিয়মের নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম শুরু করবেন না। এতে আপনার শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।

দিনের বেলা:
১) দিনের বেলা ঘুম থেকে উঠার ৬ ঘন্টা পর এবং ১২ ঘন্টার মধ্যের সময়টুকু সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যায়ামের পক্ষে। আপনি যদি সকাল ৮ টায় ঘুম থেকে উঠেন তবে দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে সময়টুকু ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়। এ সময়ের মধ্যে যে কোন সময়কে বেছে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজনীয় ব্যায়ামটুকু করতে।

২) দুপুরের খাবার গ্রহনের পর কমপক্ষে দুই ঘন্টা পরে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। এর আগে কখনোই ব্যায়াম করবেন না। আপনার শরীরের অবস্থা অনুযায়ী সময় নির্ধারন করাটা ভালো। এজন্য কোন অভিঙ্গ ফিটনেস এক্সপার্টের পরামর্শ নিতে পারেন।

পড়ুন  ওজন কমাতে ৪টি যোগ ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে রাখুন

৩) প্রতিদিন যদি আপনার রুটিনে দুই ঘন্টা ব্যায়াম করার সিডিউল বা ইচ্ছা থাকে তবে অবশ্যই সে সময়টুকু দিনের বেলা ফেলবেন। ভারী কোন ব্যায়াম করার ফলে শরীরের অনেক অঙ্গ প্রতঙ্গ প্রসারিত হয়ে থাকে। এদের রিলাক্স করার জন্য বেশ সময়ের প্রয়োজন। তাই দিনের যেকোন সময়কে বেছে নিতে পারেন।

সন্ধ্যাবেলা:
১) অনেকে অফিস থেকে ফিরে আসেন এ সময়ে। আবার অনেকে কিছুটা রাত করে ফেরেন। বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে তবেই ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। শরীরের কোন রকম কান্তিভাব থাকলে ব্যায়াম শুরু করবেন না। শরীরের কান্তিভাব আপনার মনঃসংযোগ দিতে বাঁধা দিবে। তাই হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে কান্তিভাব দুর করে ফেলুন।

২) সন্ধ্যাবেলা শরীরচর্চার জন্য যোগব্যায়াম খুবই উপযোগী। এই ব্যায়াম গুলো ধীরে ধীরে করতে হয় বলে শরীরের উপর তেমন কোন চাপ পড়ে না। এছাড়াও ট্রেডমিল, সাইকিং ব্যবহার করেও ব্যায়াম করতে পারেন। নিজের পছন্দ অনুযায়ী গতি বাড়িয়ে নিতে পারেন। আর একটি ব্যায়াম করতে পারেন তাহলো মেডিটেশন। ১৫ মিনিট নিরিবিলি পরিবেশে মেডিটেশন করলে আপনার মন ও শরীর দুটোই শান্ত হয়ে যাবে।

পড়ুন  খালি পেটে ব্যায়াম, ভালো নাকি খারাপ! জেনে নিন....

জেনে রাখুন:
১) ব্যায়ামের সঠিক সময়ের সঙ্গে খাওয়ার সময়ের সঠিক ভারসাম্য না থাকলে ব্যায়ামের সুফল পাওয়া যাবে না। সময় অনুযায়ী ব্যায়ামের ধরনও ভিন্ন হবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই রুটিন করে নিন।

২) যদি কর্মব্যস্ততার কারনে সারাদিন কোন ব্যায়ামই করা না হয় তাহলে সেটা আপনার শরীর ও মনের জন্য ভালো নয়। তাই ব্যায়াম একদমই না করার চেয়ে কিছু সময় করাটা অনেক ভালো। তাই সময়ের সল্পতা থাকলে অল্প সময়ের জন্য হলেও প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

৩) ব্যায়াম করার পর শরীরের তাপমাত্রা, রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। এর ফলে শরীর অধিক কর্মক্ষম থাকে এবং শান্তভাব কেটে যায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগেই ব্যায়াম করা উচিত নয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কমপক্ষে ৩ ঘন্টা হাতে নিয়ে ব্যায়াম করে নিতে পারেন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.