যক্ষা নামক রোগ কি মেরুদন্ডেও হয়ে থাকে ?
হ্যাঁ, হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর নাম পটস ডিজিজ। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ মারা যায় এই যক্ষার কারনে মারা যায় । আর এই যক্ষা রোগের বেশির ভাগই হয়ে থাকে ভারত, বাংলাদেশ, চীন, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ায়।
পটস ডিজিজ হলে কোমর বা পিঠের মেরুদণ্ডের হাড়ে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমণ হয়। ধীরে ধীরে হাড় ক্ষয় হতে থাকে। এই জীবাণু সাধারণত ফুসফুস বা দেহের অন্য কোনো স্থান থেকে রক্তবাহিত হয়ে মেরুদণ্ডে পৌঁছায়। ওপর-নিচে হাড়গুলোতে সংক্রমণ ক্রমাগত ছড়াতে থাকে এবং একসময় হাড়ে ভাঙন ধরে। কখনো ভাঙা হাড়ের চাপে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পা বা কোমর অবশ হয়ে যেতে পারে। কখনো রোগী কুঁজো হয়ে পড়ে। কখনো পিঠে বা কোমরের এক জায়গায় ফোড়ার মতো ফুলে ওঠে এই যক্ষার কারনে ।
মেরুদণ্ডের যক্ষায় কোমর বা পিঠের একটা সুনির্দিষ্ট স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, সঙ্গে জ্বর, অরুচি, ওজন হ্রাস ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। ব্যথার কারণে রোগী পিঠ অতিরিক্ত সোজা করে হাঁটে। কখনো হাত দিলে মেরুদণ্ডে একটু ফোলা অংশও টের পাওয়া যেতে পারে। শুরুর দিকে সাধারণ এক্স–রেতে এটা ধরা পড়ে না। তবে রক্তপরীক্ষা এবং ত্বকে মনটোক্স টেস্ট পজিটিভ থাকলে যক্ষা সন্দেহের তালিকায় উঠে আসবে। মেরুদণ্ডের এমআরআই পরীক্ষায় রোগ ধরা পড়ে।
দীর্ঘমেয়াদি যক্ষার চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে শল্যচিকিৎসা দরকার হয়। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায় ততই মঙ্গল। স্নায়ু বিনষ্ট হয়ে গেলে বা পা অবশ হয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসায় সফলতার সম্ভাবনা কমে যায়। অপুষ্টি, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস, ফুসফুস বা অন্য কোনো যক্ষার ঠিকমতো চিকিৎসা না করা—এসব মেরুদণ্ডের যক্ষার জন্য দায়ী। মেরুদণ্ডের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে এবং পাশাপাশি অন্যান্য উপসর্গ টের পেলে দেরি না করে সঠিক কারণ অনুসন্ধান করা উচিত।