...

হার্ট অ্যাটাকের আগে দেহ যে ৭টি সিগনাল দেয়

আপনি জানেন কি? হার্ট অ্যাটাকের এক মাস আগে থেকেই দেহ কিছু সতর্কতা সংকেত দিতে শুরু করে। ৭টি লক্ষণ আছে যেগুলো দেখা গেলে বুঝবেন আপনি শিগগিরই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন। লক্ষণগুলো দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
জেনে নেয়া যাক-

হার্ট অ্যাটাক

১. অস্বাভাবিক রকমের শারীরিক দুর্বলতা: রক্তপ্রবাহ কমে গেলে এবং রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে এমনটা হয়। রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোতে চর্বি জমে বাধা সৃষ্টি করলে এবং মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়লে হৃদরোগের প্রধানতম এই লক্ষণটি দেখা দেয়।

২. ঝিমুনি: দেহে রক্তের প্রবাহ কমে গেলে ঝিমুনিও দেখা দেয়। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে ঝিমুনির সৃষ্টি হয়।

৩. ঠাণ্ডা ঘাম: রক্তপ্রবাহ কমে গেলে দেহে ঘাম ঝরলে স্যাঁতসেতে ও ঠাণ্ডা ভাব অনুভূত হবে।

৪. বুক ব্যথা: বুক, বাহু, পিঠ এবং কাঁধে ব্যাথা অনুভূত হলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বুকে ব্যথা এবং সংকোচন হৃৎপিণ্ডের অসুস্থতার একটি বড় লক্ষণ।

৫. শ্বাসকষ্ট: ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন এবং রক্ত সরবরাহ না হলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। হার্টের সমস্যা থাকলে ফুসফুসে রক্ত চলাচল কমে যায়। আর শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস ছোট হয়ে আসার মতো সমস্যা দেখা যায়।

পড়ুন  আপনার প্রয়োজনীয় ১৫টি স্বাস্থ্য টিপস

৬. ঠাণ্ডা বা ফ্লু: হার্ট অ্যাটাকের শিকার অনেককেই এক মাস আগে থেকে ঠাণ্ডা-সর্দি বা ফ্লু-তে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।

৭. বমি, বদহজম, তলপেটে ব্যথা: বমিভাব, বদহজম, বুক হৃৎপিণ্ডে জ্বালাপোড়া করা বা তলপেটে ব্যথাও অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। সুতরাং এই লক্ষণগুলো দেখা গেলেও হৃদরোগের ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা

হার্ট অ্যাটাকে প্রতিবছর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। হঠাৎ বুকে ব্যাথা, মুহূর্তেই শরীর নিস্তেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে ছোটাছুটি করতে করতেই রোগী কোমায় কিংবা মৃত্যুর মুখে ঢেলে পড়ে। কিন্তু যদি হার্ট অ্যাটাকের পর থেকে হাসপাতালে নেয়ার আগ পর্যন্ত সময়টাতে দিশেহারা না হয়ে বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া যায় তবে বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে রোগী। অনেক সময় হঠাৎ প্রচণ্ড বুকে ব্যাথা শুরু হলে ঘাবড়ে না গিয়ে স্থির হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে এরপর দ্রুত হাসপাতালের দিকে রওনা হওয়া উচিত।

একটুখানি অসচেতনতার ফলে হয়ে যেতে পারে হিতে বিপরীত অবস্থা। হার্ট অ্যাটাকের ঠিক পরেই রোগীকে কী ধরনের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে তা নিচে দেওয়া হল
-রোগীর মুখে কোনো খাবার দেয়া যাবে না। বুকে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভূত হবার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে সটান করে বিছানায় শোয়াতে হবে। এরপর সে আঁটসাট কোনো জামা পরা থাকলে তা ঢিলে করে দিতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে।

পড়ুন  সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে নকল ডিম, জেনে রাখুন বিষাক্ত ডিম চিনে নেয়ার ১০টি লক্ষণ

-এই সময়ে রোগীর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মহামূল্যবান। তাই যা-ই করার দ্রুত করতে হবে। তবে অতি দ্রুত কিছু করতে গিয়ে ভুল করলে রোগীর জীবন আরো শঙ্কটে পড়তে পারে। এই সময়ে রোগীকে একা ফেলে রাখা যাবে না। তার পাশে থাকতে হবে এবং চিকিৎসক না আসা পর্যন্ত তার প্রতিটি লক্ষণের ওপর নজর রাখতে হবে। তবে রোগীকে নিয়ে ঘরে বসে থাকাটা সবচেয়ে বিপজ্জনক।

-হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে রোগীর মুখে একটি অ্যাস্পিরিন জাতীয় ওষুধ দেয়া যেতে পারে। তবে তা রোগীকে চুষে বা চিবিয়ে খেতে হবে।

-রোগী যদি বেশি ঘামতে থাকে তাহলে তার জিবের নিচে এক চামচ গ্লুকোজ দেয়া যেতে পারে। কিন্তু ভুলেই কোনো ঠাণ্ডা এবং মিষ্টি পানীয় তার মুখে দেয়া যাবে না।

-রোগীর যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং শ্বাস ছোট হয়ে যায় তাহলে তাকে আধা শোয়া অবস্থায় বসিয়ে কাশি দেয়ার চেষ্টা করাতে হবে।

-রোগী অচেতন হয়ে গেলে এবং কোনো সাড়া না দিলে সিপিআর’র সাহায্য নিতে হবে। সিপিআর হলো হাত দিয়ে বুকে হালকা চাপের সৃষ্টি করা এবং মুখ দিয়ে রোগীর মুখে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা।

পড়ুন  ওজন কমানো নিয়ে কিছু ভুল ধারনা

-প্রাথমিক চিকিৎসার ফলাফলের ওপর নির্ভর না করে রোগীকে এমন কোনো হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে যেখানে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন আইসিইউ আছে এবং পৃথক কার্ডিও বিভাগ আছে।

-স্থানীয় কোনো ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে সিরিয়ালে নাম না লিখিয়ে সরাসরি ভালো কোনো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীকে ভর্তি করাতে হবে।

-এ সময় কোনো অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কারপূর্ণ চিকিৎসা রোগীর জীবনের জন্য হুমকি হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। তাই এই সময়টাতে আপনজনের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রতিটি পদক্ষেপ নিন এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া ব্যবস্থা করুন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.