...

বেইজ মেকাপ করুন ঘরে বসেই

নিজের মেকাপটা বরাবরই নিজেই করার অভ্যাস করাটাই উত্তম। কেননা, ঢাকার নামি দামী পার্লারে একটা পার্টি মেকাপ নেওয়ার খরচ কেমন সেটা জানা আছে তো? সবচেয়ে হাল্কা সাজ শুরু হয় ১৫০০ থেকে , মোটামুটি মনমত সাজ নেওয়া যায় কম হলেও ৩৫০০টাকা। তাই টুকটাক পার্টি মেকআপে টাকা খরচ না করতে চাইলে নিজেই করুন নিজের মেকআপ। আর মেকাপ এ বেইজ করাটা একটা সুন্দর গেটাপ/মেকাপের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যাদের ত্বকের ধরণ তৈলাক্ত, সেনসিটিভ এবং কিছুটা ব্রণের ধাঁত আছে তাদের সবসময় মেকাপ এর ব্যাপারে একটু সাবধান থাকতে হয়।মেকাপ

বেইজ মেকাপ করুন ঘরে বসেই

জমকালো পার্টি মেকাপের বেইজ দুইভাবে করা যায় –

– ফাউন্ডেশন, ফেইসপাউডার ইউজ করে
– প্যানকেক ব্যবহার করে।

যার যেমন ভালো লাগে সেভাবে করবেন। কিন্তু একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন প্যানকেক স্কিনের জন্য খুবই খারাপ। যত কম ব্যবহার করবেন তত ভালো, বা ব্যবহার না করলে আরও ভাল। মাসে একবার বা দুইবার ব্যবহার করলে খুব বেশি একটা সমস্যা সাধারনত হয় না।

বেইজ করার জন্য প্রস্তুতিঃ
পার্টি মেকাপ এর বেইজ করতে বসার আগে লক্ষ করুন দিনের পার্টি না, রাতের পার্টি, ওয়েদার কেমন। যদি দিনের পার্টি হয় তাহলে বেইজ টা করতে হবে যত হাল্কা এবং ন্যাচারাল করা যায়, আর রাতের পার্টি হলে একটু ভারি বেইজ হলে সমস্যা হয় না, বরং লাইটিং এ ছবি ভালো আসবে। বেইজ করার আগে মুখে একটা উপটান লাগিয়ে নিন, শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এবার বরফ ঘষে নিন ১০ মিনিট। হয়ে গেলে ড্রাই স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজ করে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য যদি ওয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার থাকে তাহলে তা দিয়ে নিন হাল্কা করে। এবার একটা ব্যান্ড দিয়ে চুল আটকিয়ে নিন যাতে মুখে চুল না পরে একদমই।

পড়ুন  ব্রণ ও বসন্তের গর্ত নির্মূল করার ৩টি ঘরোয়া উপায়

বেইজ করার পদ্ধতিঃ
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ ফেইস প্রাইমার (যদি থাকে) , ফাউন্ডেশন/প্যানকেক, কনসিলার, ফেইসপাউডার, মেকাপ সেটিং স্প্রে (যদি থাকে), ফেইস ব্রাশ/স্পঞ্জ।
কোন প্রোডাক্ট সাজেস্ট করছি না, শুধু পদ্ধতির বর্ণনা করলাম, যাতে যার যা প্রোডাক্ট আছে তা দিয়েই চেষ্টা করতে পারেন।

১) ফেইস প্রাইমার আঙ্গুলের মাথায় নিয়ে মুখে অল ওভার ঘষে ঘষে লাগাতে হবে, প্রাইমার সুন্দর করে ব্লেন্ড করে নিলে বেইজ অনেক স্মুথ হবে। প্রাইমার এর পরিমাণ বেশি হলে কিন্তু মুখ ওয়েলি লাগবে, আবার কম হলেও কাজ দিবে না।

২) প্রাইমার দেওয়ার পর মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন। প্রাইমারটা ফেইসে বসে গেলে, তারপর মুখে গাঢ় কোন দাগ থাকলে কনসিলার দিয়ে হাল্কা করে কভার করে নিতে হবে, আঙ্গুল দিয়ে হাল্কা করে প্রেস করে দাগের উপর বসিয়ে দিতে হবে, খেয়াল রাখুন কনসিলার ব্লেন্ড করবেন না। তাতে করে দাগ না ঢেকে মেসি হয়ে যাবে, এমনভাবে কনসিলার লাগাতে হবে যাতে শুধু দাগটাকে কভার করে আর স্কিনের মতই ন্যাচারাল লাগে। শুধুমাত্র গাঢ় দাগ থাকলে এখন কনসিলিং করুন, দাগ হাল্কা হলে ফাউন্ডেশনের পর কন্সিলিং করতে হবে।

পড়ুন  মেকাপ করলেও কেউ বুঝবে না আপনি মেকাপ করেছেন

৩) এবার ফাউন্ডেশন দিতে হবে। লিকুইড ফাউন্ডেশনে সমস্যা থাকলে প্যানকেক বা প্যানস্টিক ব্যবহার করতে পারেন।

লিকুইড ফাউন্ডেশনঃ অনেকে হাতের উপরে ফাউন্ডেশন ঢেলে সেখান থেকে নিয়ে ব্লেন্ড করে, কিন্তু যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের উপরে নিলে ত্বকের তেল ফাউন্ডেশনে মেস আপ করতে পারে। সেক্ষেত্রে প্লেট বা প্লাস্টিক শীট ব্যবহার করতে পারেন।

ফাউন্ডেশন যদি ভারি হয় যেমন রেভলন কালারস্টে তাহলে বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার বা স্পঞ্জ ব্যবহার করুন। ব্লেন্ডার পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পানি ফেলে দিয়ে তাতে ফাউন্ডেশন নিয়ে মুখে ব্লেন্ড করুন। আবার হাল্কা ধরণের ফাউন্ডেশনের জন্য ফেইস ব্রাশ করা যায়। অনেকে আবার আঙ্গুল দিয়ে ব্লেন্ড করতেই পছন্দ করেন। তবে তোইলাক্ত স্কিনের জন্য হাতের ব্যবহার না করাই ভালো। পরিস্কার ব্রাশ বা স্পঞ্জ ব্যবহার করা উচিৎ।

প্যানকেকঃ প্যানকেক ব্যবহার করতে চাইলে আপনার শেড মিলিয়ে দুইটি প্যানকেক কিনে নিন। চাইলে একটা দিয়েও করতে পারেন। ভালো স্পঞ্জ কিনে নিন আগেই। স্পঞ্জ ভিজিয়ে বাড়তি পানি ফেলে দিয়ে তারপর স্পঞ্জে প্যানকেক লাগিয়ে আস্তে আস্তে বেইজ তৈরি করেন , বার বার স্পঞ্জ ভিজিয়ে ব্লেন্ড করুন। ত্বকের উপর স্পঞ্জ না ঘষে বরং ছোট ছোট স্ট্রোকে ফেইস কভার করুন। চাইলে প্রথমে হলুদ একটা শেড দিয়ে এক লেয়ার করে তার উপর ন্যাচারাল শেড দিয়ে বেইজ করতে পারেন। বা দুই শেড মিশিয়েও করতে পারেন।

সাধারনত রাতের জমকালো মেকাপে ভারি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়, দিনের কোন বিয়ের অনুষ্ঠান হলে প্যানকেক ব্যবহার করা যায় যেহেতু প্যানকেক অনেক বেশি সময় ওয়েল ফ্রি থাকে, গলে না, দিনের নরমাল পার্টি হলে হাল্কা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।

পড়ুন  মেকাপ ট্রিকস: দেখুন ব্যয় কমিয়ে আনুন অনেকখানি

৪) ফাউন্ডেশন বা প্যানকেক দিয়ে বেইজ হয়ে গেলে এবার যদি মেকাপ সেটিং স্প্রে থাকে তাহলে স্প্রে করে দিতে পারেন এই বেইজের উপরে। অনেকে এটা ফেইস পাউডার দিয়ে বেইজ সেট করার পরেও দেয়। এমনকি আপনি স্প্রে ফাউন্ডেশন দেওয়ার আগে ফাউন্ডেশনের মধ্যে অ স্প্রে করে নিতে পারেন। মেকাপ সেটিং স্প্রে না থাকলে স্প্রে বোতলে পানি নিয়ে তাও হাল্কা স্প্রে করে দিতে পারেন, এতে করে মেকাপের স্থায়িত্ব বেশি না হলেও এয়ারব্রাশড টাইপ একটা ব্যাপার আনতে পারবেন।

৫) এবার ফাউন্ডেশন বা প্যানকেকের বেইজটা ফেইস পাউডার দিয়ে সেট করে নিন। পাউডার পাফ দিয়ে হাল্কা করে বেইজের উপর বুলিয়ে সেট করে নিতে পারেন। আপনি যদি ফেইস পাউডারের সাথে দেওয়া স্পঞ্জ ব্যবহার করতে চান সেই ক্ষেত্রে শুধু হাল্কা করে ড্যাব করে করে পাউডার দিয়ে সেট করুন, স্পঞ্জ দিয়ে ফেইস পাউডার যদি ব্লেন্ড করতে যান ফাউন্ডেশনের উপর তাহলে কিন্তু ফাউন্ডেশন এর বেইজ নষ্ট হয়ে যাবে।

ফেইস পাউডারের বদলে বা ফেইস পাউডারের উপরে এইচ ডি সেটিং পাওডার ব্যবহার করতে পারেন, ব্রাশের মাথায় সামান্য পাউডার নিয়ে হাল্কা করে বুলিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেল আপনার বেইজ।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.