...

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে যে সব খাবার

স্মৃতিশক্তি আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজন তা বলার অবকাশ থাকে না । ভুলে যাওয়া খুবই সাধারণ প্রক্রিয়া। সময়ের সাথে সাথে মানুষের স্মৃতি দুর্বল হয়ে যায়। তবে সময়ের এই প্রভাবকে একটু দীর্ঘায়িত করা যায়। হার্ট, ফুসফুস, পেশির যত্নের সাথে সাথে সুস্থ থাকতে হলে খেয়াল রাখতে হবে আপনার মস্তিষ্কের দিকেও।বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে । আবার দেখা যায় অনেক বাচ্চারও স্মৃতি সমস্যা দেখা যায়।স্মৃতিশক্তি

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে যে সব খাবার

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বজুড়ে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ বৃদ্ধি সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য প্রদান করেছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, বিশ্বে স্মৃতিশক্তি সমস্যাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা চার কোটি ৭৫ লাখ। প্রতি বছর এই দলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৭০ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। বর্তমান মানুষের মস্তিষ্কের কোষের উৎপাদনের হার নিম্নমুখী। মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার শুধু শরীর ঠিক রাখে না, মস্তিষ্কও সুস্থ রাখে। এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে, আপনি শোবার ঘর থেকে রান্নাঘরে গেলেন কিছু একটা চিন্তা করে। কিন্তু রান্নাঘরে গিয়েই ভুলে গেলেন কী জন্যে এসেছেন?

এখানে কিছু খাবারের কথা বলা হলো যা আপনার এক ঝলকে দেখে নিন সেগুলি কী কী ?

মাছ

পড়ুন  নিরীহ যে খাবারগুলো আপনার এনার্জি নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট

তৈলাক্ত মাছ স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ উপকারী। যেমন—স্যামন, সার্ডিন, টুনা, ম্যাকরেল প্রভৃতি মাছ নিয়মিত খাওয়া উচিত।

মাছের চর্বি

মাছের চর্বিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা মস্তিষ্ক গঠন ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক। অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্য গর্ভবতী নারীদের সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মাছ খেতে পরামর্শ দেয়া হয়। মাছ শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। স্যামন এবং টুনা মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস।

টমেটো

টমেটো স্মৃতিশক্তি সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন, যা খুবই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত খাবারের সঙ্গে সালাদ হিসেবে টমেটো খেলে তা মস্তিষ্কের পক্ষে বিশেষ উপকারী।

ভিটামিন ‘বি’ সমৃদ্ধ খাবার

ভিটামিন বি, বি৬, বি১২ সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন। মাছ, মুরগির মাংস, ডিম এবং শাক জাতীয় খাবারে এর পরিমাণ বেশি থাকে।

শস্য জাতীয় খাবার

শস্য জাতীয় খাবার, বাদাম, ব্রকোলি, কুমড়োর দানা মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারী। এ কারণে নিয়মিত ডায়েট চার্টে এগুলো বেশি বেশি রাখা উচিত।

কাঠবাদাম

কাঠবাদাম একটি চমৎকার আয়ুর্বেদিক উপাদান। এটি স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের জন্যও ভালো।

যা করতে হবে

পড়ুন  মনে রাখার ক্ষমতা কীভাবে বাড়াবেন ?

– ৫ থেকে ১০টি কাঠবাদাম সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন।

– পরের দিন সকালে খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং একে গুঁড়া করুন।

– এক গ্লাস দুধের মধ্যে এই গুঁড়া মিশিয়ে ফুটান।

– স্বাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য চিনি বা মধু মেশাতে পারেন।

– ৩০ থেকে ৪০ দিন এটি প্রতিদিন খান।

মধু ও দারুচিনি

মধু ও দারুচিনি স্নায়ুকে শিথিল করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। গবেষণায় বলা হয়, কেবল দারুচিনি একটু নাকের কাছে নিয়ে শুঁকলেও স্মৃতিশক্তি ভালো হয়, এতে মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ে।

অনেকে এও বলেন, ঘুমের আগে মধু খেলে মানসিক চাপ কমে; ঘুমেও সাহায্য হয়। এটি স্মৃতি একত্রীকরণে ভূমিকা রাখে।

যা করতে হবে

– এক চা চামচ কাঁচা মধুর মধ্যে এক চিমটি দারুচিনি মেশান।

– কয়েক মাস ধরে প্রতি রাতে এটি খান।

ডিম

যেকোনো পুষ্টিবিদই আপনাকে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিবেন। ডিমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিগুণ। ডিমের হলুদ অংশে কোলিন (দ্রবণীয় নিউট্রিয়েন্ট) রয়েছে, যা মস্তিষ্কের জন্য বেশ দরকারি। বিশেষ করে ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে এটি ভালো কাজ করে।

সূর্যমুখীর বীজ

এই বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ই রয়েছে, যা স্মৃতিশক্তির কার্যাবলীকে মসৃণ গতিতে পরিচালিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বয়স্কদের স্মৃতিশক্তি রক্ষার্থে ত্রাণকর্তা হিসেবেও কাজ করে সূর্যমুখীর বীজ। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোলিন রয়েছে, যা স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিশক্তির ঘাটতি পূরণে কাজ করে।

পড়ুন  যারা উচ্চতা অনুযায়ী অনেক চিকন ও ওজন কম তাদের জন্য ওজন বৃদ্ধির উপায়

বেরি

স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি এবং ব্লুবেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা মস্তিষ্কের সংকেত পাঠানোর পথকে শক্তিশালী করে। মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু এবং প্রদাহ প্রতিরোধ করে বেরি। এটি বললে ভুল হবে না, বেরির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিমেনশিয়া এবং অ্যালজেইমার বিলম্বিত করতেও সহায়তা করে।

শাক

শাক শরীর গঠনের খাবার হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া শাকে লুটেনিন নামে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি কগনিটিভ (জ্ঞান অর্জন ও চিন্তা করার ক্ষমতা) পতন প্রতিরোধ করে। লুটেইন মস্তিষ্কের প্রধান কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি ও শেখার ক্ষমতার উন্নয়ন করে।

বিটমূল

মেরুন রঙের এই সবজিটি নাইট্রেটের সবচেয়ে ভালো উৎস, যা মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ উন্নতি করে মস্তিষ্কের কার্যাবলী বৃদ্ধি করে। ডিমেনশিয়া আক্রান্তদের মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক করে।

শস্যদানা

আস্ত শস্যদানা পুরো শরীরে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

কালো চকোলেট

এতে প্রাকৃতিক উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। পরিমিত মাত্রায় চকোলেট খেলে এরমধ্যে থাকা ক্যাফেইন আপনার মস্তিষ্ক এবং মেজাজ স্বাভাবিক রাখবে।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About Deb Mondal

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.