...

রূপচর্চায় মধু ও নিম এর ব্যবহার

হারবাল বা প্রাকৃতিক রূপচর্চার ক্ষেত্রে মধু ও নিমের ব্যবহার, শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। তাই রোজকার রূপচর্চায় মধু ও নিমের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের পরিবর্তনে রূপচর্চার উপকরণেও আসছে বিশদ পরিবর্তন। বাজারের নতুন এসব উপকরণ সবই যে ত্বকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলছে, এমনটিও নয়। তাই রূপচর্চার ক্ষেত্রে হারবাল বা প্রাকৃতিক উপাদানের প্রতি নিম মানুষের ঝোঁক দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রাকৃতিক রূপচর্চায় নিম(Neem) ও মধুর ব্যবহার সম্পর্কে এ আয়োজন।

 

রূপচর্চায় মধু ও নিম এর ব্যবহার

নিমপাতা(neem leaf) প্রাকৃতিক এমন একটি উপাদান, যাকে স্বাস্থ্য এবং রূপচর্চায় খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়।

নিমপাতাকে(neem leaf) শহরের লোকেরা অনেকটা উপেক্ষা করলেও এটি ৪ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে আয়ুর্বেদে ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশুদ্ধকরণ দুই লিটার পানির মধ্যে ৫০টি নিম(Neem) পাতা সিদ্ধ করতে হবে। পাতাগুলো নরম ও বিবর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পানি ফুটাতে হবে। পানি সবুজ রঙ ধারণ করলে নামিয়ে বোতলে ঢেলে রাখতে হবে। প্রতিদিন গোসলের পানিতে ১০০ মি.লি. পরিমাণ নিমপাতার পানি মিশিয়ে গোসল করলে চামড়ার ইনফেকশন দূর হবে। এ ছাড়া ব্রণ এবং হোয়াইট হেডস দূর হবে। নিমপাতা স্কিন টোনার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। প্রতিরাতে তুলার নরম বল নিম(Neem) পাতা সিদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে মুখে লাগাতে হবে। এতে ব্রণ, ক্ষত চিহ্ন, মুখের কালো দাগ দূর হবে। একই ভাবে চুলে ব্যবহার করলে খুশকি এবং অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হবে।
ফেসপ্যাক হিসেবে ১০টি নিমপাতা ও একটি ছোট কমলার খোসা ছাড়িয়ে অল্প পরিমাণ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। উপকরণগুলো মসৃণ করে পেস্ট তৈরি করতে হবে। অল্প পরিমাণ মধু ও দুধ পেস্টে মেশাতে হবে। ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করা যাবে। এটি ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ, চেহারায় ক্ষতের গর্ত দূর করবে। মধু ও নিম(Neem) উন্নতমানের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।

পড়ুন  সাধারণ পোশাকে গর্জিয়াস লুক আনতে মিরর ওয়ার্ক নিজেই করুন ঘরে বসে

কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে নিম পাতা(neem leaf) , সিদ্ধ পানি ও মধুর একটি পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান। এটি একটি ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া খুশকি দূর করতেও কাজে লাগে। চিকিৎসা শরীরে ব্যথা, কেঁটে গেলে, পুড়ে গেলে, কান ব্যথা, মচকানো, মাথা ব্যথা, জ্বর কমাতে নিমপাতা(neem leaf) ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। নিমের শিকড় এবং নিমগাছের বাকলও ঔষধি গুণসম্পন্ন। চুলের উকুন ও খুশকি দূর করতে এসব ব্যবহার করা যায়।

নিম পাতা(neem leaf) ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। চামড়ার ইনফেকশন রোধে এ ছাড়া ব্রণ, চুলকানি ও এলার্জি রোধে নিম পাতা(neem leaf) কার্যকর। নিম(Neem) এর প্রসাধনী_ নিমের তেল, সাবান, ট্যালকম পাউডার, শ্যাম্পু, লোশন, ক্রিম, টুথপেস্ট, পাতার ক্যাপসুল বেশ প্রচলিত পণ্য। নিমের এসব পণ্য ত্বককে মসৃণ করে ও ইনফেকশনের হাত থেকে দূরে রাখে।

রূপচর্চায় মধুঃ
শুধু শরীর গঠনে নয় , রূপচর্চায়ও মধুর ব্যবহার সর্বজন বিদিত। মধু যে কোনো ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যায়। স্বাভাবিক , তৈলাক্ত, শুষ্ক কিংবা রুক্ষ যে কোনো ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন। মধু ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ঘাটতি কমায়, উজ্জ্বল আভা আনে, বলিরেখাও দূর করে দেয়। মধু যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান। তাই তো গ্রিক সুন্দরীরা তাদের যৌবন ধরে রাখতে নিয়মিত মধু পান করতেন। কিংবদন্তী সুন্দরী ক্লিওপেট্রাও তার মুখে মধু ব্যবহার করতেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য মিসরের মায়েরা শিশুদের মধু পান করাতেন। এ ছাড়া মধু সহযোগে বিভিন্ন ক্রিম তৈরি করে মুখে লাগানো এমনকি, শুধু মধু ক্রিমের মতো ব্যবহার করলে মুখের বিভিন্ন দাগ দূর হয়ে উজ্জ্বলতা, মসৃণতা ফিরে আসে। মধুর নিয়মিত ব্যবহার মুখের ব্রণ দূর করতেও শতভাগ কাজ করে।

পড়ুন  খুশকি তাড়াতে নিম পাতার ৪ ব্যবহার

ত্বকের যত্নে মধুর সঙ্গে চাইলে আপেল বা কমলার রস, সামান্য মুলতানি মাটি, একটু টক মিশিয়ে একসঙ্গে বেল্গন্ড করে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।

নিজের ত্বককে সহনশীল রাখতে নিম(Neem) ও মধুর ব্যবহার আপনার ত্বকে এনে দিতে পারে অভাবনীয় সব লাবণ্যতা। তাই নিয়মিত রূপচর্চায় নিম(Neem) আর মধুর সঙ্গেই থাকুন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About Deb Mondal

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.