...

গর্ভবতী অবস্থায় ব্যাক পেইন হবার কারণ ও তা প্রতিকারের উপায়

গর্ভধারণ করার পর মা এবং তার পরিবারের বাকি সদস্যদের মাঝে উত্তেজনাপূর্ণ অনুভবের সৃষ্টি হয়। কারণ তারা বিশ্বের মধ্যে একটি নতুন জীবন আনার প্রস্তুতি নিতে থাকে। গর্ভাবস্থায় অপ্রত্যাশিত বিভিন্ন জটিলতার কারণে মা এর মাঝে অস্বস্তি এর সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ব্যাক পেইন বা পিঠে ব্যথা।

ব্যাক পেইন
ব্যাক পেইন হবার কারন:
ব্যাক পেইন হবার অনেক ধরণের কারন রয়েছে। বিভিন্ন কারনে এর সৃষ্টি হয়। তবে, ব্যাক পেইন হবার প্রধান কারন হল গর্ভবতী অবস্থায় ওজন বৃদ্ধি পাওয়া। ওজন বৃদ্ধির ফলে এ সমস্যা প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।
এ সময় ওজন বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। নিজের মাঝে অন্য আরেকটি শরীর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই, ওজন বাড়বেই। যার ফলে শরীরে আলাদাভাবে চাপের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ব্যথার সৃষ্টি হয়।
মাঝে মাঝে ব্যাক পেইন অনেক বেশি গুরুতর হতে পারে। অনেক সময় জরায়ু সংকোচনের কারনে হতে পারে। তাই, ব্যাক পেইন এর সমস্যা হলে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
গর্ভবতী মহিলাদের কোন না কোন সময় গর্ভাবস্থার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যাক পেইন এর মোকাবেলা করতে হয়। কিন্তু, কিছু উপায় রয়েছে যা আপনাকে ও আপনার সন্তানকে কোন কষ্ট না দিয়ে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করবে। এখানে, গর্ভবতী অবস্থায় স্বাভাবিক ব্যাক পেইন দূর করার পাঁচটি উপায় বর্ণনা করা হল-

পড়ুন  পেটের কৃমি দূর করুন ঘরোয়া ৫ উপায়ে

১. ব্যায়াম:
ব্যাক পেইন দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল ব্যায়াম। নিজের পেশীকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি শরীরের সর্বস্তরের সুস্থতা খুব সহজেই শিশুকে বহন করার শক্তি যোগায়। তখন ওজন বৃদ্ধির পরও আপনি খুব সহজেই এবং আরামে শিশুকে বহন করতে পারবেন।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম হল হাঁটা, সাতার কাটা এবং আসতে আসতে সাইকেল চালান। আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে আপনার জন্য যে ব্যায়ামটি ভাল হয়, সে ব্যায়ামটি করা শুরু করেন।

২. ম্যাসেজ থেরাপি:
পেশী শিথিল এবং শরীরের টান উপশম করার জন্য ম্যাসেজ থেরাপি এর চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না। একটি ভাল ম্যাসেজ দেয়ার ফলে আপনার পেশী ব্যথা মুক্ত হবার সাথে সাথে আপনি কম চাপ অনুভব করবেন। দিনের শেষে আপনি মানসিক চাওমুক্ত থাকবেন। আপনার পেশীগুলো যখন কম চাপ অনুভব করবে তখন আপনি আপনার পিঠে কম ব্যথা অনুভব করবেন।

৩. গরম এবং ঠাণ্ডা:
আপনার ব্যথার স্থানে গরম ও ঠাণ্ডা সেঁকা দিতে পারেন। এতে আপনি কিছু সময়ের জন্য ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। তবে অবশ্যই আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। প্রথমে দুই-তিনদিন আপনার ব্যথাযুক্ত স্থানে ২০ মিনিট করে ঠাণ্ডা কম্প্রেস প্রদান করুন। এরপরে, আবার কয়েকদিন একই স্থানে গরম কম্প্রেস প্রদান করুন। কিন্তু, খেয়াল রাখবেন, গর্ভাবস্থায় কখনও পেটে ঠাণ্ডা বা গরম কম্প্রেস করবেন না।

পড়ুন  যৌন মিলনকালে ব্যাক-পেইন বা পিঠ ব্যথায় কি করবেন ?

ব্যাক পেইন হলে করনীয় কি?

৪. আপনার অঙ্গবিন্যাসের উন্নতি করুন:
গর্ভবতী অবস্থায় মেরুদণ্ডের উপর বেশি চাপ পড়ে এবং অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হয়। তাই, আপনি যখন বসে বসে কাজ করবেন, তখন সাথে একটি ছোট তোয়ালে বহন করুন এবং তা আপনার ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। যতক্ষণ বসে থাকবেন, সোজা হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ভাল অঙ্গবিন্যাস বজায় থাকবে, যা আপনার মেরুদণ্ডের ব্যথা উপশম করতে কাজে দিবে।

৫. ডাক্তারের পরামর্শ নিন:
যদি উপরের ৪টি কাজ করার পরও আপনার ব্যথা দূর না হয়, তবে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডাক্তার আপনাকে ও শিশুকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সমর্থ হবে।
ব্যাক পেইন দূর করার জন্য অবশ্যই নিজেদের জীবন-ধারনের মান উন্নত করতে হবে। যে সকল কারনে ব্যাক পেইনের সৃষ্টি হয়, সে সকল কর্ম পরিহার করতে হবে।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.