...

ফুল দিয়ে চুল সাজাতে

ফুলফুল দিয়ে চুল  সাজাতে

 

শরৎকাল! শিউলি, কাশফুল আর সাদা মেঘের ঘনঘটা চারপাশে। সাজ সাজ রবে এগিয়ে আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। মনের মাঝে বাজতে শুরু করেছে ঢাকের টাকডুম টাকডুম বোল।
শুধু কি তাই! চাই নতুন জামা, শাড়ি, চুড়ি আরও কত-কী অনুষঙ্গ। কত বেছে কত ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতে হয় নিজের পছন্দের জিনিসটা। কত উত্তেজনা সে সবে।
এত সবের মাঝে ভুলে যাচ্ছেন কি? এত সাজের সমাহারের মাঝে আপনার প্রিয় চুল সাজানোর কথা? ভেবেছেন? কীভাবে সাজাতে চান আপনার চুলরাশি।
পূজায় চুল সাজাতে নিশ্চয়ই ফুলের কথাই ভাবছেন? হ্যাঁ, চুল সাজাতে ফুলের যে জুড়ি নেই।

 

কবি নজরুল বোধ করি এ জন্যই গেয়েছেন ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি, দেব খোঁপায় তারার ফুল…।’ বললেন নজরুলসংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। বিয়ে, জন্মদিন কিংবা গানের মঞ্চ সব জায়গাতেই তিনি হাজির হন ফুল দিয়ে চুল সাজিয়ে। তাঁরমতে, চুলে ফুলের সাজ তো বাঙালি নারীর চিরন্তন রূপ। খোঁপায় পরার জন্য তাজা যেকোনো ফুলই তাঁর পছন্দ। তবে গাজরার মালা তাঁর বেশি ভালো লাগে।

শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে একই রঙের বা বিপরীত রঙের যেকোনো ফুলই তিনি খোঁপায় সাজিয়ে নেন। যেমন সাদা শাড়ির সঙ্গে লাল ফুল। লালের সঙ্গে সাদা ফুল। সবুজ, গোলাপি, হলুদ অন্যান্য যেকোনো রঙের শাড়ির সঙ্গে মানিয়ে যায় তেমন ফুলটিই বেছে নেন তিনি।

পড়ুন  চুলের সব সমস্যার সমাধান দেবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি তেল

বেলি, কাঠবেলির মালা বা লহর, রঙ্গন, কাঠগোলাপসহ সব তাজা ফুলই তাঁর পছন্দের তালিকায় ঠাঁই নেয়। ফেরদৌস আরার মতে, চুলের সাজে ফুল একটি অনন্য অলংকার।
রূপ বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, ফুল দিয়ে চুল সাজানোর আগে বয়স, ব্যক্তিত্ব, পেশা, সামাজিক অবস্থান, পোশাক, চেহারার ধরন, চুলের কাট, কোথায় যাচ্ছেন, কী ধরনের অনুষ্ঠান বা সেই অনুষ্ঠান কতটা জমকালো, এসব ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

বুঝে নিতে হবে যে ফুলে সাজতে চাইছেন সেটায় আপনাকে কতটা মানাবে।
পূজার দিন ভোরে অঞ্জলি দিতে যাওয়ার আগে স্নান সেরে ভিজে এলোচুলে লাগিয়ে নিতে পারেন কাঠবেলির লহর। অথবা কানের পাশে গুঁজে দিতে পারেন সুগিন্ধ যেকোনো ফুল যেমন: দোলনচাঁপা, পদ্ম, মাধবীলতা, শিউলি ফুলের মালা, জুঁই, বেলি ফুলের মালা, গন্ধরাজ, সাদা বা লাল জবা কিংবা কাঠগোলাপ। এতে ফুলের সুগন্ধ মনের ভেতর একধরনের পবিত্র, স্নিগ্ধ, ফুর ফুরে সতেজ ভাব নিয়ে আসবে।

এই ফুলগুলো যেহেতু রোদে চুপসে যায় আর বেশিক্ষণ থাকে না, তাই এগুলো সকালবেলার অঞ্জলির সময় পরাই ভালো। সে ক্ষেত্রে হালকা সাজে শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজে এলোমেলো পিঠময় ছড়ানো চুলই থাকুক।

পড়ুন  মুখের সাথে মানানসই চুলের সাজ শিখে নিন

তবে কেউ চাইলে বেণি বা হাত খোঁপাও করে নিতে পারেন। খোঁপার পাশে, বেণির ভাঁজে ভাঁজে গুঁজে দিতে পারেন ছোট ছোট ফুল। এ রকম সাজে অসাধারণ হয়ে উঠবে আপনার অঞ্জলিবেলা।
তবে মুখের আকৃতি ছোট, গোল আকৃতির চ্যাপ্টা হলে ছোট ফুল ব্যবহার করা উচিত। যাঁদের মুখের আকৃতি লম্বাটে তাঁরা অপেক্ষাকৃত ছড়ানো, বড় ফুল ব্যবহার করতে পারেন পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। তবে সাদা রঙের ফুল যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই মানানসই।

লাল ঠোঁটে, লাল টিপের সঙ্গে লাল রঙ্গন, গোলাপ, জবা, ডালিয়া ফুল পরলে ভালো লাগবে। গোলাপি ঠোঁটে, সবুজ শাড়িতে পরা যেতে পারে, পাতাসহ এক থোকা বাগানবিলাসও। সাজা যায় নানা রকম বুনোফুলেও।
সেই সঙ্গে চুলে করে নিতে পারেন হাত খোঁপা, বেণি খোঁপা, উঁচু খোঁপা, গোল খোঁপা, পনিটেইল, খেজুর বেণি, ফ্রেঞ্চরোল ইত্যাদি। পূজায় যেহেতু গরমে এবং মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে প্রতিমা দেখার ব্যাপার আছে।

তাই চুলটা গুছিয়ে বেশ আঁটসাঁট করে বেঁধে নেওয়াই ভালো মনে করেন রাহিমা সুলতানা।
এখানে বলা ফুলের অনেকগুলোই বাজারে কিনতে পাওয়া না গেলেও নিজ বাগানে অথবা আশপাশের বাড়িতে পাওয়া যায়।

পড়ুন  চুল আয়রন করার সময় এড়িয়ে চলুন এই ক্ষতিকর ভুলগুলো

বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন রঙের গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা, গোলাপ, কাঠবেলি, কাঠগোলাপ ইত্যাদি। ২০-৩০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে এসব ফুল। তবে কিছু ফুল আছে যেগুলো দোকানে পাওয়া না গেলেও অর্ডার দিলে এনে দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ফুলের দোকানিরা।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About Deb Mondal

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.