...

মেয়েদের পিরিয়ড সম্পর্কিত ৭টি অজানা বিষয় জেনে নিন

পিরিয়ড

মেয়েদের পিরিয়ড সম্পর্কিত ৭টি অজানা বিষয়

শরীরের ভেতরে ঘটে যাওয়া আর পাঁচটা ঘটনা যেমন খাবার হজম হওয়া, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, রক্ত সঞ্চালনের মতোই নারীদের পিরিয়ড হওয়া একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু বেশির ভাগ মেয়েই পরোক্ষভাবে এখনো পিরিয়ডের দিনগুলোতে ‘শরীর খারাপ’ হয়েছে বলে মনে করেন।

 

প্রতি মাসেই মেয়েরা কয়েকদিন অস্বস্তিতে থাকার ব্যাপারে প্রস্তুত থাকেন। এ সময় মেয়েদের জরায়ু থেকে কার্ভিক্স পার হয়ে জননেন্দ্রিয় দিয়ে রক্ত নির্গত হয়। এই অবস্থার অর্থ তাদের শরীর স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে, স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় হরমোন পাচ্ছে শরীর।

 

—পিরিয়ড চলার সময়ে মেয়েদের শরীরের ভিতরে এবং বাইরে কী কী পরিবর্তন হয়?

নারীর পিরিয়ড তাকে প্রতি মাসে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। এই অবস্থা গড়ে ২৮ দিন পর্যন্ত থাকে। এ সময়ে শরীরে এস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়ে। ব্রন দেখা দেয়া সহ নানা রকম বদল ঘটে। মাতৃত্বের জন্য নারীদেহ কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে সে প্রাকৃতিক চক্র নিয়ে ৭টি অজানা বা কম জানা বিষয় থাকছে এখানে।
পিরিয়ড চলাকালীন প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সামগ্রী কিনতে অস্বস্তি বোধ করবেন না। মনে রাখবেন পিরিয়ড একটি স্বাভাবিক অবস্থা।

পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে কী করবেন?

১) পিরিয়ডের সময় চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যায়

পিরিয়ড চলার সময়ে সময়ে পেট ব্যথা, পিঠ ব্যথা, বমি বমি ভাব সবকিছু মেয়েদের চিন্তাপ্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এ সময় স্বাভাবিক চিন্তা করার ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। ২০১৪ সালে পেইন জার্নালে ছাপা একটা আর্টিকেলে বলা হয়েছে, পিরিয়ডের সময় মেয়েদের কিছু কিছু বিষয়ে মনোযোগ, মনোযোগের সময়কাল এবং দুটি কাজের মধ্যে মনোযোগ ভাগ হয়ে যাওয়া ও পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি বাধাগ্রস্ত হয়। সুতরাং বোঝা যাওয়ার কথা, পিরিয়ডের সময় মেয়েদের ব্যথা স্নায়ু ক্ষমতার বাইরে।

পড়ুন  কিশোর সন্তানের অভদ্র আচরণ মোকাবিলার ৫টি পন্থা

পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে স্তনে ব্যথা হলে কী করবেন?

২) পিরিয়ডের সময় গলার স্বর বদলে যেতে পারে

পিরিয়ডের সময় মেয়েদের গলার স্বরও বদলে যেতে পারে। স্বরতন্ত্র এবং নারীর জননেন্দ্রিয়ের কোষগুলি একই ধরনের এবং হরমোনের কারণে তারা একই রকম আচরণ করে। ২০১১ তে এথোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি লেখায় বলা হয়েছে, নারীর কণ্ঠ শুনে পুরুষেরা বুঝতে পারে তার পিরিয়ড চলছে। পুরুষদের তিনটি গ্রুপকে নারীদের ভয়েসের রেকর্ডিং শোনানো হয়েছিল। এই রেকর্ডিংগুলিতে নারীরা মাসের বিভিন্ন সময়ে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুণেছে। এই আওয়াজ থেকে পুরুষেরা শতকরা ৩৫ ভাগ সময় পিরিয়ড চলাকালীন আওয়াজ চিনতে পেরেছে।

 

৩) পিরিয়ডের সময় ছেলেদের মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ কম থাকে

ছেলেরা মেয়েদের পিরিয়ডের সময়ের আওয়াজ চিনতে পারার মত ভালো শ্রোতাই শুধু না, তাদের ঘ্রাণ ক্ষমতাও সূক্ষ। গবেষণায় দেখা গেছে নারীদের ঘ্রাণ দ্বারা পুরুষদের যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরন উদ্দীপিত হয়, বিশেষ করে যখন নারীদের শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হতে থাকে। ২০১০ সালে সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে দেখা যায় যেসব নারীর শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হচ্ছিল না তাদের পরা টি শার্টের গন্ধের তুলনায় যেসব নারীর শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হচ্ছিল তাদের টি শার্টের গন্ধে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন বেশি উদ্দীপিত হয়েছে।

পড়ুন  পিরিয়ড নিয়ে কিছু বিব্রতকর প্রশ্ন ও সেগুলোর সমাধান দেখে নিন

 

৪) পিরিয়ডের সময় নারীদের আরো বেশি উদ্যম অনুভূত হতে পারে

মেয়েদের পিরিয়ড সাংঘাতিকভাবে তাদের যৌন তাড়নার সাথে সম্পর্কিত। পিরিয়ডের সময় প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। এই কারণে এ সময় নারীদের আরো বেশি উদ্যমী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ বিষয়ে আরেকটি থিওরি হলো এ সময় নারীদের শ্রোণী এলাকায় বেশি রক্ত সঞ্চিত থাকে। এই কারণে উদ্যম বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া মনে করা হয় এ সময় নারীদের জননেন্দ্রিয় বেশি পিচ্ছিল থাকে, ফলে সেক্স বেশি আনন্দময় হয়, ফলে এ সময় নারীদের যৌনতাড়না বেশি হতে পারে।
পিরিয়ড চলাকালীন সুবিধার জন্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ একটি পিরিয়ড কিট তৈরি করে নিন।

 

৫) নারীরা পিরিয়ডের সময়ও গর্ভবতী হতে পারে

যেহেতু পিরিয়ডের সময় নারীদের শারীরিক সক্রিয়তা বেশি থাকে, মনে রাখা দরকার এ সময় যৌন সম্পর্ক হলে তারা গর্ভবতী হতেও পারে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যাদের পিরিয়ড ২৮ থেকে ৩০ দিন মেয়াদী তাদের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে যাদের পিরিয়ড ২১ থেকে ২৪ দিন মেয়াদী তাদের গর্ভবতী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

৬) প্রতি পিরিয়ডে গড়ে এক কাপেরও কম রক্ত নিঃসৃত হয়

মেয়েদের হয়ত মনে হয় শরীর থেকে রক্তের বিরাট প্রবাহ বের হয়ে যাচ্ছে, বক্স বক্স প্যাড হয়ত ব্যবহৃত হয়, কিন্তু নিঃসৃত রক্তের পরিমাণ কম। সাধারণত প্রথম দুই দিন বেশি রক্ত নিঃসৃত হয়। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের মতে, প্রতি মাসে কয়েক চামচ থেকে বড়জোর এক কাপ পরিমাণ রক্ত বের হয় শরীর থেকে। যদি ব্যবহার শুরু করার দুই ঘণ্টার কম সময়ে প্যাড সম্পূর্ণ ভিজে যায় এবং বদলানোর মত হয় তাহলে বুঝতে হবে এটি স্বাভাবিকের বাইরে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।মেয়েদের মাসিক ২ থেকে ৭দিন পর্যন্ত চলতে পারে।

পড়ুন  মেয়েদের সেফ পিরিয়ড ও ফারটাইল পিরিয়ড- Girls Safe Period Risk Period

 

৭) পিরিয়ডের সময় মেয়েদের শরীরের অন্যান্য জায়গা দিয়েও রক্ত বের হতে পারে

সাধারণত পিরিয়ডের সময় নারীদের জরায়ু থেকে রক্ত নির্গত হয়। তবে পিরিয়ডের কারণে তাদের চোখ, নাক এবং মুখ দিয়েও রক্ত বের হতে পারে। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি জার্নালে একটি কেস রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, এক তরুণীর দুই পায়ে ঘা ছিল। পিরিয়ডের সময় তার সেই ঘায়ে প্রচণ্ড ব্যথা এবং সেখান থেকে অঝোরে রক্ত পড়া শুরু হয়। বিভিন্ন চিকিৎসার পরেও পিরিয়ডের সময় পাঁচ ছয়দিন তার পায়ের ক্ষত বড় হয়। এবং পিরিয়ড শেষ হওয়ার তিনদিন পরে রক্ত পড়া বন্ধ হলে সেখানে পাতলা চামড়ার আবরণ তৈরি হয়।

পিরিয়ড নিয়ে কিছু ভুল ধারণা

আপনার ডক্টর হেল্থ সাইটে কোন প্রকার অশ্লীল আর্টিকেল দেওয়া হয় না। মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন, আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। ধণ্যবাদ আপনার ডক্টর হেল্থ সাইটের সাথে থাকার জন্য।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.