...

প্রথমে বড় আপাকে, তারপর মেঝো আপা আর এখন আমাকে….

আপাপ্রথমে বড় আপাকে, তারপর মেঝো আপা আর এখন আমাকে

শাম্মী (ছদ্মনাম) লেখাটি পাঠিয়েছেন কলেজ পড়ুয়া এক বোন গাজীপুর থেকে, আমি ক্লাস নাইনে থাকাকালীন একটি ছেলেকে ভালোবাসতাম, তাকে ছাড়া অন্য কাওকে নিয়ে বাচবো সেটা কখনো কল্পনা করিনি। কিন্তু নিয়তি খুব খারাপ, আমার সম্পকের কথা জেনে যায় আমার পরিবার। জোর করে এক রাতে আমাকে বিয়ে দেওয়া হয় আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে। আমার সাথে উনার বয়সের গ্যাপ ১৬ বছরের।

 

বাসার অন্য কেও বিয়েতে রাজি ছিলো না, কিন্তু আমি বিয়ে না করলে বাবা বিষ খাবে সেই ভয়েই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। বিয়ের পর আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। বিয়ের কিছুদিন পরেই আস্তে আস্তে প্রকাশ পাই উনার আসল রুপ। উনার মুখ থেকেই জানতে পারলাম আমার বড় বোনের সাথে তার সম্পর্ক ছিলো। কিছু নগ্ন ছবিও আমাকে দেখায়, শুধু তাই নয় বড় আপার সাথে সম্পর্ক ব্রেকাপ হবার পরেই মেঝো আপাকে টার্গেট করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেঝো আমার সাথে বিয়ে হয়নি। এটা আমি উনার মুখ থেকেই শুনলাম, বড় আপা নাকি উনাকে ঠকিয়েছে সেই প্রতিশোধ আমার উপর দিয়ে নিয়েছে। কিছুদিন না যেতেই উনি আমাকে বিভিন্ন কথা তুলে অযথা শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের ছয় মাস পার না হতেই উনি আরো ভয়ংকর রুপ ধারণ করে।

পড়ুন  আমি ডিভোর্সি মহিলা, প্রেমিক ছেলেটি আমার থেকে পাঁচ বছরের ছোট ও বিবাহিত...

একদিন উনার এক বসকে আমাদের বাসায় দাওয়াত করে। রাতে উনার বসকে আমাদের পাশের রুমে থাকতে দেয়। আমাকে উনি সেই বসের রুমে থাকার জন্য পাঠাতে চাই। একথা শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়ে। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে ব্যাপক মারধর করে। অনেক কস্টের আমি নিজেকে সেভ করি, আমি আমার আম্মাকে সব কিছু খুলে বলি আম্মা আমাকে ধর্য্য ধারণ করতে বলে। দিনের পর দিন এসব অত্যাচার বাড়তে থাকে, একসময় বাসায় চলে আসি পালিয়ে। এই কথাগুলো বাসার সবাই বিশ্বাস করলেও আব্বা বিশ্বাস করে না। আব্বার চিন্তা এগুলো বিশ্বাস করে মেয়ের পক্ষে আসলে আব্বার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে, আমি বাড়িতে চলে আসার দুই মাস পরে ওই মুখোশধারী নরপিশাচ আমাকে আবারো নিতে আসে। আমি যেতে চাইনি তবুও বাবার কারণে যেতে হয়, কিছুদিন পর থেকেই আমার উপর আবারো চলতে থাকে অমানুষিক নির্যাতন। এবার আবারো না পেরে বাড়িতে চলে আসি, আব্বা আমাকে আর বাড়িতে রাখতে চায় না। আব্বা বাড়ি থেকে বলে হয় স্বামীর ঘর করতে হবে, না হলে বাড়ি ছাড়তে হবে। তখন সিদ্ধান্ত নিই বাড়ি ছাড়বো তবুও ওই নরপিশাচের কাছে ফিরে যাবো না। আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি, সেই থেকে আজো বাড়িতে যাইনি। আমার আম্মা ছাড়া আর কেও আমার খোঁজ নেয় না। ঢাকার একটি কলেজে পড়ছি, পাশাপাশি টিউশনি করে চলি। প্রতিনিয়ত আছে স্বামি নামধারী ওই নরপিশাচের হুমকি, আমাকে পেলে নাকি খুন করবে। আপু উনি আমাকে এখনো তালাক দেইনি, আমি সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকি কারণ আমার পাশে কেও নেই। এই শহরে আমি একা, আমি নিজের মতো করে বাঁচতে চাই, আমি চাই আমার অধিকার। আমি কিভাবে তালাক দিব ওই ভন্ডকে, আমি কিভাবে আইনি সহায়তা পাবো?

পড়ুন  বেশিদিন বাঁচতে পানি অতিরিক্ত মাত্রায় ফোটানো বন্ধ করুন

 

পরামর্শ:
তোমার বড় আপুর উপর প্রতিশোধ নিতে যেয়ে তোমার স্বামী যেটা করেছে সেটা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত। আর তোমার বাবা যেটা তোমার সাথে করেছে সেটা একদম উচিত হয়নি। তোমার অবশ্যই তালাক দেবার অধিকার আছে চাইলেই সেটা করতে পারো। আর হুমকি মোকাবেলা করার জন্য আইনি সহায়তা নিতে পারো। ভালো থেকো, ভেংগে পড়ো না, তোমার জীবনের গতি অবশ্যই পরিবর্তিত হবে।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.