...

জন্ডিস কী? জন্ডিসের প্রতিকার

জন্ডিসের
জন্ডিসের প্রতিকার

জন্ডিস (Jaundice) আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। জন্ডিসের কারণে চামড়া ও চোখ হলুদ দেখায় কারণ শরীরে বিলিরুবিন নামে হলুদ রঞ্জক পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। বিলিরুবিনের স্বভাবিক পরিমাণ < ১.০-১.৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার। এর দ্বিগুণ হলে বাইরে থেকে বোঝা যায়। কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাব গাঢ় হলুদ হয়ে যায়। চামড়া পাণ্ডুর বা ফ্যাকাশে দেখায় বলে একে আগে পাণ্ডুরোগ বলা হত। ভারতীয় উপমহাদেশে জন্ডিসের একটি প্রধান কারণ হল ভাইরাস ঘটিত হেপাটাইটিস।

 

জন্ডিস কি? -জন্ডিস বলতে বুঝায় ত্বক-চোখ-মিউকাস মেমব্রেনে হলুদাভ রঙ দেখা যাওয়াকে।
জন্ডিস কি কোন রোগ? -মনে রাখবেন, জন্ডিস কোন রোগ নয়, বরং এটি হলো রোগের লক্ষন।

 

এটি কোন কোন রোগের লক্ষন?

যেসব রোগে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেসব রোগে জন্ডিস দেখা দেয়। যেমন লিভারে হেপাটাইটিস ভাইরাসের আক্রমন; মদ, অতিরিক্ত প্যারাসিটামল বা বিষাক্ত মাশরুম সেবনে লিভার ড্যামেজ, কিছু রোগে লিভারে অতিরিক্ত আয়ন জমে লিভার ড্যামেজ, শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষগুলোর অতি সক্রিয় হয়ে গিয়ে লিভার কে আক্রমন অথবা জন্মগত ত্রুটির কারণে লিভারের সঙ্গে অন্ত্রের সংযোগ স্থলে কোনপ্রকার বাধা। এছাড়াও যদি কোন কারণে শরীরের লোহিত রক্তকনিকা অতিরিক্ত ভাংগতে থাকে তাহলেও জন্ডিস দেখা দেয়। এগুলো ছাড়াও ক্যান্সার, গলব্লাডারে সমস্যা ইত্যাদিতেও জন্ডিস দেখা যায়।

পড়ুন  ধ্বজভঙ্গ রোগের লক্ষণ বা উপসর্গগুলি কি কি দয়া করে বিস্তারিত জানবেন কি?

 

বিলুরুবিন কি?

আমাদের শরীরের লোহিত রক্ত কনিকা (Red Blood Cell) প্রতি তিন মাস পরপর ভেঙ্গে যায় এবং নতুন রক্তকনিকা তৈরী হয়। লোহিত রক্ত কনিকার ভিতর থাকে হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিন ভেঙ্গেই বিলুরুবিন তৈরী হয় এবং লিভারের মাধ্যমে প্রকৃয়াজাত হয়ে অন্ত্রে পৌছায়। অন্ত্র থেকে এটি মলের সাহায্যে শরীরের বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। কিছুটা আবার অন্ত্র থেকে রক্তে যায় এবং কিডনীর সাহায্যে মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বের হয়ে যায়।

 
সাধারণভাবে আমরা সবাই জানি জন্ডিস হলো লিভার বা যকৃতেয় রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা সত্য হলেও অনেক ক্ষেত্রে জন্ডিসের আরো অনেক কারণ থাকে। সহজভারে বললে রক্তে বিলিরুবিলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে চামড়া, চোখ, প্রস্রাব, মুখগহবরে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তাকে জন্ডিস বলে। বিলিরুবিন হচ্ছে রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙে গিয়ে তৈরি রাসায়নিক উপাদান। বিলিরুবিন লিভারে গিয়ে পিত্ততে পরিণত হয়। পিত্ত লিভার থেকে বের হয়ে যায় বলেই আমাদের জন্ডিসে আক্রান্ত হতে হয় না।

 

কাজেই কোন কারণে লোহিত কনিকা বেশি বেশি ভেঙে বিলিরুবিণ তৈরি হলে। বিলিরুবিন লিভারে পিত্ততে পরিণত না হতে পারলে অথবা পিত্ত লিভারে তৈরি হলো ঠিক কিন্তু বের হবার রাস্তায় কোন বাধা থাকলে জন্ডিস হয়ে থাকে।

পড়ুন  গর্ভাবস্থায় এক্স-রে করা নিষেধ কী কারণে?

জন্ডিসের প্রকারভেদ :

জন্ডিসকে তিনভাগে ভাগ করা যায়
১. প্রি-হেপার্টিক : রক্তের লোহিত কনিকা কোন কারণে বেশি বেশি ভাঙলে। যেমন: ক. হিমোলাইটিক এনেমিয়া, খ. ম্যালেরিয়া, গ. থ্যালাসেমিয়া।
২. হেপাটিক : লিভারের মধ্যে কোন সমস্যা থাকলে। অধিকাংশ জন্ডিস এ কারণেই হয়ে থাকে। যেমন: ভাইরাল হেপাটাইটিস (অ,ই,ঈ,উ,ঊ), অতিরিক্ত মদাপানের ফলে, লিভার ক্যান্সার হলে।
৩. পোস্ট হেপার্টিক পিত্ত লিভারে তৈরি হবার পর লিভার থেকে বের হবার রাস্তায় কোন সমস্যা থাকলে। যেমন : পিত্তনালীয় রাস্তায় পাথর, পিত্তনালীর ক্যান্সার।

জেনে নিন ক্যান্সারের লক্ষণ বুঝার ১১ টি উপসর্গ

জন্ডিসের লক্ষণ:

শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন চামড়া, চোখ, মুখগহবর হলূদ বর্ণ ধারণ করা, প্রস্রাবের রঙ হলুদ হওয়া, পায়খানা ফ্যাকাসে হওয়া, বমি বমি ভাব ও পেটে ব্যথা। কারো কারো জ্বর হতে পারে। পেট ও পায়ে পানি আসতে পারে।

 

জন্ডিস বুঝতে হলে কী করবেন?

আপনার জন্ডিস আছে কি-নাই তা সহজেই রক্তের বিলিরুবিল পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।
স্বাভাবিক বিলিরুবিন .২-১.২ মি.গ্রা./ডি. লি.
সুপ্ত জন্ডিস ১.২-২ মি. গ্রা./ডি: লি.
পূর্ন জন্ডিস ২ মি:গ্রা./ডি. লি.
যদি বিলিরুবিনের মাত্রা ২মি.গ্রা/ ডি. লি.-এর বেশি হয় তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

পড়ুন  বিউটি পার্লারে সাজতে যাওয়া কি মুসলিম নারীদের জন্য বৈধ?

 

জন্ডিসে করণীয়:

প্রচুর পানি পান করুন ও বিশ্রামে থাকুন, চিকিৎসক যে সমস্ত ঔষধ দিয়েছে তার বাইরে অন্য কোন ঔষধ খাবেন না। এলকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন।

জেনে নিন জন্ডিস হলে কি খাওয়া উচিত ও কি খাওয়া উচিত না

যে কোন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের জানান দিতে আপনার ডক্টর রয়েছে আপনাদের পাশে।জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করার জন্য নিয়মিত ভিজিট করুন আপনার ডক্টর health সাইটে।মনে না থাকলে আপনি সাইট আপনার ব্রাউজারে সেভ করে রাখুন।ধন্যবাদ

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.