...

কুকচিতে চুলকানি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও এর উত্তর

কুকচিতে চুলকানি নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। আজ আমার  কুকচির চুলকানি নিয়ে পাঠাকের বিভিন্ন প্রশ্ন ও সেগুযলোর উত্তর নিয়ে সাজিয়েছি এই পোস্টটি। স্ক্যাবিস এক প্রকার চর্মজনিত রোগ যা Sarcoptes scabei নামক এক প্রকার জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়।এর প্রধান লক্ষণ হল শরীরে চুলকানি ও গুটি গুটি র‍্যাশ ওঠা।

কুকচিতে চুলকানি

কুকচিতে চুলকানি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও এর উত্তর

স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত এ রোগ হয়। তাছাড়া রোগীর ব্যবহৃত কাপড় গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা এতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে ৷প্রথমবার সংক্রমণে একজন ব্যক্তির সাধারণত দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়।দ্বিতীয় সংক্রমণের লক্ষণগুলি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হতে পারে।এই উপসর্গগুলি শরীরের বেশিরভাগ অংশে, যেমন-কব্জি, আঙ্গুলের ভিতর বা কোমরের আশেপাশে উপস্থিত হতে পারে। রাতের বেলা চুলকানির তীব্রতা আরও বাড়ে।

আমার কুকচিতে চুলকানি হইছে,ঐজাইগাই যখন চুলকাই তখন গোল চাকেরমতো হয়ে যাই, আর আনেক কস ঝরে,, এই চিলকানি সারার উপাই কি?? আমার বয়স ২১,,

গলায় চুলকানি

গলায় চুলকানি

প্রিয় গ্রাহক,আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ।গ্রাহক,কতদিন ধরে আপনার এই সমস্যা হচ্ছে ? আপনার শরীরের অন্যকোথাও এমন চুলকানি আছে ? আপনার বাড়ীর অন্যকারো এই চুলকানি আছে ?গ্রাহক ,আপনার সম্ভবত দাদ হয়েছে ।শরীরের যেকোন অঙ্গের চামড়ায় দাদ হতে পারে। আপনার যেখানে হয়েছে ,অর্থাৎ কুঁচকির (groin) দাদকে বলা হয় – টিনিয়া ক্রুরিস ।সাধারণত ঘামে ভেজা শরীর, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন শরীর, দীর্ঘ সময় ভেজা থাকে এমন শরীর, ত্বকে ক্ষত আছে এমন শরীর এই ছত্রাকগুলোর স্পোর (বা, হাইফা) দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই ছত্রাকগুলোর সুপ্তিকাল ৩ থেকে ৫ দিন।সাধারনত যে সব লক্ষ্যন দেখা দেয় :– প্রথমে আক্রান্ত স্থানে ছোট লাল গোটা হয় এবং সামান্য চুলকায়।- পরে আক্রান্ত স্থানে বাদামী বর্ণের আইশ হয় এবং স্থানটি বৃত্তাকারে বড় হতে থাকে।-

ক্রমে সুনির্দিষ্ট কিনারা সহ বৃত্তের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং মাঝখানে ত্বক স্বাভাবিক হয়ে আসে।- চুলকানি বৃদ্ধি পায়।- চুলকানোর পর আক্রান্ত স্থানে জ্বালা হয় এবং আঠালো রস বের হয়।- মাথায় হলে স্থানে স্থানে চুল উঠে যায়,এটি সংক্রামক রোগ। অতিসহজেই রোগী থেকে সুস্থ দেহে বিস্তার লাভ করতে পারে। রোগীর চিরুনি, তোয়ালে, বিছানা ইত্যাদি ব্যাবহার করলে এ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে। তবে রোগাক্রান্ত পোষা বিড়ালের মাধ্যমে এটি বেশী ছড়ায়।ফাঙ্গাস এড়াতে হলে শরীর শুষ্ক রাখতে হবে। কাপড় পুরোপুরি শুকনো হতে হবে। কুঁচকির ত্বক যাতে ভেজা না থাকে, সেখানে যেন আর্দ্রতা আটকে না যায় সে জন্য সিনথেটিকের অন্তর্বাস এড়িয়ে সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে।সংক্রমণের ব্যাপ্তি ও ধরনের ওপর নির্ভর করে ফাঙ্গাসের চিকিৎসাপদ্ধতি। তবে সঠিক চিকিৎসায় যেকোনো ফাঙ্গাসই সারিয়ে তোলা সম্ভব। ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঘটে গেলে সে ক্ষেত্রে ত্বকের উপরিভাগে অ্যান্টিফাঙ্গাল মলম ব্যবহার, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সাসপেনশনধর্মী অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ সেবন করে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে সেরা ওঠা গেলেও ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার জন্য অনুকূল পরিবেশ থেকে মুক্ত হতে না পারলে ফাঙ্গাসের যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে ফাঙ্গাসের অনেক কার্যকর ওষুধ বাজারে এসেছে। এগুলো সেবনে শারীরিক প্রতিক্রিয়া খুবই কম। ফাঙ্গাল ওষুধ সেবনের আগে লিভারের কোনো ত্রুটি আছে কি না তা পরখ করে নিতে হবে।চিকিৎসার আগে তিন-চার মাসের মধ্যে জন্ডিস হওয়ার ইতিহাস থাকলে তা ডাক্তারকে জানাতে হবে। অনেকেই ফাঙ্গাসকে সহজ ব্যাপার মনে করে ফার্মেসির ওষুধ বিক্রেতার কথায় ওষুধ খেয়ে থাকেন। এটা ঠিক নয বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফাঙ্গাস সংক্রমণ প্রায় ১০০ ভাগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে সেটা আবারো হতে পারে। কারণ ত্বকে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি হলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে চেষ্টা করবে। তাই ফাঙ্গাস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তা হচ্ছে পা, আঙুলের ফাঁক,নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করা ।আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি।আর কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন ।

পড়ুন  স্টিম ফেসিয়াল করার ঘরোয়া টিপস

আরো অনেকে কুকচিতে চুলকানি বা শীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি সমস্যার কথা জানয়ে প্রশ্ন করেছেন

জাকির হোসেন : বয়স -৪০
চকবাজার, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন : আমার মাথার চুল ক্রমেই পড়ে যাচ্ছে এবং মাথার সামনের এবং তালুর দিকের চুল কমে গিয়ে প্রায় টাক হয়ে গেছে। আমি হোমিও চিকিৎসা করিয়েছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি। পত্রিকায় চুলের ওপর আপনার লেখাটি পড়েছি। তাই অনুগ্রহ করে অনিবার্য এবং টাক পড়ার হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পেতে পারি তার পরামর্শ দিলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
উত্তর : আপনার প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে যে, আপনার এটা বংশগত চুলপড়া। যাকে বলা হয় অহফৎড়মবহবঃরপ ধষড়ঢ়বরপধ তবুও আপনার যেকোনো একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে নেয়া ভালো। আর যদি একান্তই না দেখাতে পারেন, তা হলে গরহড়ীরফরষ দুই পারসেন্ট ঝড়ষঁঃরড়হ রোজ দুইবার মাথায় লাগাবেন। প্রতিবার এক গখ করে এবং অন্তত এক বছর পর্যন্ত লাগাবেন।

গোপনাঙ্গের চুলকানি

গোপনাঙ্গের চুলকানি

তুহিন : বয়স-২৭
সেক্টর-৭, উত্তরা
প্রশ্ন : আমার দীর্ঘ দিন ধরেই কুচকিতে চুলকানি হয়। ক্যানিসটিন মলম লাগাই, তাতে কমে যায় এবং কিছুদিন পর আবার দেখা দেয়। বিশেষ করে গরম কালে বেড়ে যায়। দু-একবার গ্রাইসোভিনও খেয়েছি, তাতে কমে আবার হয়? এ অবস্থায় কী করতে পারি জানালে খুবই কৃতজ্ঞ হবো?
উত্তর : এটি একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। এটাকে বলা হয় ঞওঘঊঅ ঈজটজওঝ গরমকালে কুচকিতে ঘাম জমে স্থানটি ভিজে থাকে বলে ওখানটায় গরমকালে এটি দেখা দেয়। আপনি এ ক্ষেত্রে ঞধন ঘরফড়ারহ ৫০০ সম রোজ একটি করে একবার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত খাবেন এবং সেই সাথে ঘবড়ংঃবহ পৎবধস দৈনিক তিনবার লাগাবেন। রোজকার ব্যবহৃত জাইঙ্গা, লুঙ্গি ও প্যান্ট প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার ধুয়ে ফেলতে হবে, তা না হলে এটা চলে যাবে কিন্তু অবশ্যই দু-এক মাস পর আবার দেখা দেবে।

পড়ুন  রূপচর্চায় বেসন

জাফর : বয়স-৩৫
তেজকুনি পাড়া, ঢাকা।
প্রশ্ন : আমার অনেক আগে একটি ফোঁড়া হয়েছিল। স্থানীয় ডাক্তার সেটা কেটে পুঁজ বের করে দিয়েছিল এবং সাথে ওষুধও দিয়েছিল। তাতে আমি ভালো হয়ে যাই, কিন্তু অনেক দিন হলো সেই স্থানটির চামড়া শক্ত ও উঁচু করে কালো রঙের হয়ে গেছে এবং প্রচুর চুলকায়। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী, জানালে খুবই কৃতজ্ঞ হবো?
উত্তর : আপনার কিলয়েড (কবষড়রফং) হয়েছে। এই অবস্থায় আপনি স্থানিকভাবে ট্রাইয়ামসোলন (১০-৪০ মিলিগ্রাম/এমএল) ব্যবহার করবেন প্রতি মাসে একবার, পরপর কয়েক মাস। তা হলে আকারে ও আয়তনে এটা কমে যাবে এবং সেই সাথে চুলকানিও কমে যাবে। আর একটা কথা এটার জন্য কোনো অবস্থাতেই আপনি অপারেশনে যাবেন না, তাতে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে।

নিয়াজ মোর্শেদ : বয়স-৪০
আলেকান্দা, বরিশাল
প্রশ্ন : গরমকাল এলেই আমার সারা শরীরে ছুলি বা ছলম হয়। শীতকাল এলে আবার এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। এর থেকে সম্পূর্ণভাবে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় কী?
উত্তর : ভাই নিয়াজ সাহেব, আপনি ঠিকই বলেছেন, এই রোগটি গরমকালেই বাড়ে। এটি একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। আপনি এর জন্য (২.৫ শতাংশ) ঝবষবশরঁস ঝঁষভরফব ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন গোসলের আগে ২০ মিনিট গায়ে মেখে গোসল করে ফেলবেন একটানা দুই সপ্তাহ। তারপর প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করবেন অন্তত গরমকাল না যাওয়া পর্যন্ত।

সেলিনা আক্তার শিমু
পূর্ব কাজীপাড়া, ঢাকা।
প্রশ্ন : আমার মুখের ত্বক খুব শুষ্ক ও রুক্ষ। সাবান ব্যবহার করলে রুক্ষভাব আরো বেশি ফুটে উঠে। এই অবস্থায় আমার কী সাবান ব্যবহার করা উচিত। যদি উচিত হয় তা হলে কোন সাবান ব্যবহার করা উচিত।
উত্তর : আপনার ত্বক যেহেতু রুক্ষ ও শুষ্ক তাই আপনার ত্বকে সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। তবে সাবান যদি ব্যবহার করতেই হয়, তা হলে কম ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন। সে ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সোপ বা ঙরষধঃঁস ঝড়ধঢ় ব্যবহার করা যেতে পারে। রুক্ষ ত্বকে ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা ভালো তাতে ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতার ভাব কমে।

পড়ুন  পোলাও বা বিরিয়ানীর সাথে মজাদার ডিমের কোরমা রেসিপি শিখে নিন

পিঠে চুলকানি

পিঠে চুলকানি

শাহিন মিয়া
ভূঁইঘর, থানা-ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
প্রশ্ন : আমার বয়স ২০। বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ করছি, মাথায় প্রচুর মরা চামড়া। কেউ কেউ বলছেন এটাই নাকি খুশকি এবং এই খুশকি নাকি ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের কারণে হয়। এ ক্ষেত্রে যদি সত্যিই ফাঙ্গাসের কারণে খুশকি হয় তা হলে আমার করণীয় কী?
উত্তর : হ্যাঁ। মাথায় মরা চামড়া উঠাকেই সাধারণভাবে খুশকি বলে ধরে নেয়া হয় এবং ছত্রাকের কারণে খুশকি কিন্তু হতেই পারে। এক জাতীয় ছত্রাক যার নাম পিটাইরোস্পোরোন যা কি না কম-বেশি পরিমাণ সবার ত্বকেই থাকে, তা খুশকির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ী। তাই এ জাতীয় ছত্রাককে কমাতে পারলে খুশকির পরিমাণও কমে যায়। এই জাতীয় ছত্রাকের বিরুদ্ধে সেলসান ব্লু শ্যাম্পুর ভূমিকা আছে। তাই এটা ব্যবহার করা যেতে পারে।

তানিয়া ইসলাম
বেনাপোল, শার্শা, যশোহর।
প্রশ্ন : আমার চোখের পাপড়ির গোড়ায় সাদা খুশকির মতো হয়। সেই সাথে কিছু কিছু পাপড়ি ঝরে পড়ে যাচ্ছে এবং সামান্য কিছুটা চুলকায়। এর জন্য ডাক্তারও দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি। তাই খুব চিন্তায় আছি। কী করলে ভালো হতে পারে জানাবেন।
উত্তর : হ্যাঁ, চোখের পাপড়ির এই রোগটিকে বলা হয় সেবোরিক ব্লেফরাইটিস। এর জন্য সপ্তাহে দু-তিনবার যেকোনো একটি ভালো বেবি শ্যাম্পু দিয়ে চোখের পাপড়ি ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং নিজোরাল নামক ক্রিমটি রোজ একবার দুই মাস পর্যন্ত ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ষ ডা: দিদারুল আহসান
লেখক : চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ, আলরাজি হাসপাতাল, ১২, ফার্মগেট, ঢাকা। যোগাযোগ : ০১৭১৫৬১৬২০০

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.