...

৯ লক্ষণ জানাবে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। এই রোগের কারণে শরীর প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না, বিধায় রক্তে দেখা দেয় উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি। শরীরে ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দারুণ সূক্ষ্ম হওয়ার কারণে প্রাথমিক ক্ষেত্রে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না। যার ফলে বিনা-চিকিৎসা ও অনিয়মের ফলে শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা প্রকট আকারে বেড়ে যায়। যা অনেক সময় জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দেখা দেয়। সঠিক সময়ে শারীরিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় ডায়াবেটিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা যায়। সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সুবিধার জন্য শরীরে ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার কিছু পূর্ব লক্ষণ সমূহ তুলে ধরা হলো।ডায়াবেটিস

৯ লক্ষণ জানাবে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি

পিপাসা ও প্রস্রাবের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া

পিপাসা বেড়ে যাওয়া ও ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ পাওয়ার সমস্যা দুটি ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ লক্ষণ। ডায়াবেটিস রোগ দেখা দিলে কিডনি অতিরিক্ত চিনি শোষণ করতে পারে না। বিধায় শরীরের টিস্যু থেকে অন্যান্য তরল সংগ্রহের মাধ্যমে প্রস্রাব আকারে বের হয়ে যায়। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগ দেখা দিলে বারবার প্রস্রাবের বেগ দেখা দেয় এবং পানিশূন্যতা তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পিপাসা লাগে। বাড়তি পিপাসার জন্য বেশি পানি পান করার ফলে বেশি প্রস্রাবের বেগ দেখা দেয়। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষ সারাদিনের মাঝে ৬-৭ বার প্রস্রাব করেন। স্থানভেদে ৪-১০ বার প্রস্রাবের মাত্রাকেও স্বাভাবিক ধরা হয়।

পড়ুন  নিয়মিত একটি এলাচ খেলেই এড়াতে পারবেন এই ৭টি রোগ

ক্ষুধাবোধ বৃদ্ধি পাওয়া

পিপাসা বোধ ও প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের তিনটি প্রধান লক্ষণের মাঝে অন্যতম হলো ক্ষুধাবোধ অনেক বেড়ে যাওয়া। শরীর যখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয় এবং শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। কারণ গ্রহণকৃত খাদ্য উপাদান থেকে গ্লুকোজ তৈরির মাধ্যমে কোনো শক্তি উৎপাদন করতে পারে না শরীর। যার ফলে দেখা দেয় অতিরিক্ত ক্ষুধাভাব। বারবার খাবার গ্রহণের পরেও ক্ষুধাভাব পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয় না।

শারীরিক অবসাদ বা ক্লান্তি বোধ তৈরি হওয়া

ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার সাধারণ লক্ষণগুলোর মাঝে আরেকটি হলো সবসময় অবসাদ বোধ হওয়া। ডায়াবেটিসের ফলে সবসময় ক্ষুধাবোধ কাজ করায় শারীরিকভাবে দিনভর অবসাদ কাজ করতে থাকে। কারণ শরীর তার প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত গ্লুকোজ পায় না। পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রস্রাবের জন্যে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা অবসাদ তৈরির আরেকটি কারণ।

অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়া

খাদ্যাভ্যাসে কোনো ধরনের পরিবর্তন বা শরীরচর্চা ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়াও ডায়াবেটিসের লক্ষণ। ডায়াবেটিস হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ তৈরি করতে পারে না। বিধায় শরীরে পর্যাপ্ত শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে শরীর তার জমাকৃত ফ্যাট ব্যবহার করা শুরু করে। যে কারণে হুট করেই ওজন কমে যেতে পারে। পানিশূন্যতাও ওজন কমে যাবার আরেকটি কারণ।

পড়ুন  ভাত রান্নার নতুন পদ্ধতি ডায়াবেটিস ঠেকাতে

টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের জন্য ওজন কমে যাওয়ার ব্যাপারটি স্বাভাবিক হলেও,
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

ত্বকে কালচে ভাব

অ্যাকান্থসিস নিগ্রিকানস হলো ত্বকের এক ধরনের সমস্যা। যার ফলে ত্বকের উপরিভাগের কিছু স্থানে পিচ্ছিল ভাব তৈরি হয় এবং সেখানে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। ত্বকের এই সমস্যা সাধারণত ভাঁজ হয়ে থাকা অংশে বেশি দেখা দেয়, যেমন—ঘাড়, কনুই, বগল, আঙুল, হাঁটুর পেছনের অংশ। ত্বকের এই ধরনের সমস্যাগুলো যে কারও মাঝে দেখা দিতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ত্বকের এই সমস্যাকে ডায়াবেটিসের পূর্ব লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.