...

সাধারণত যে সব কারণে আপনি সারাক্ষণ ক্লান্ত অনুভব করেন

পর্যাপ্ত ঘুম হওয়ার পরও ক্লান্তি অনুভব করেন? সারাদিন দুর্বল লাগে? ঘুমঘুম ভাব? এসব কারণে নিজের ওপরে বিরক্ত। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন, কেন এই অবসাদ? এই ক্লান্তির কারণই বা কী? সেই কারণগুলো সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।ক্লান্ত

সাধারণত যে সব কারণে আপনি সারাক্ষণ ক্লান্ত অনুভব করেন

১। আপনি মানসিক চাপের মধ্যে আছেন
আমরা সবাই জানি যে স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে মানুষ অবসন্ন বা ক্লান্ত অনুভব করে। শরীরের অনেক ক্ষতি করে স্ট্রেস। স্ট্রেসের ফলে করটিসল এর নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যার জন্য আপনি ক্লান্ত অনুভব করেন। তাই স্ট্রেস কমানো প্রয়োজন আর এর জন্য কিছু রিলাক্সেশন টেকনিক অনুসরণ করা প্রয়োজন যেমন- দম নেয়া ও ছাড়া, ইয়োগা করা বা হাঁটা। একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, আপনি যদি ১০ মিনিটের জন্যও বাইরে হাঁটতে যান তাহলে আপনার স্ট্রেস হরমোন নাটকীয়ভাবে কমে যায় এবং সুখ অনুভব করার হরমোন এন্ডোরফিন এর নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। গবেষণা বলছে যে খুব বেশি শান্ত বা ধীর থাকলেও তা আপনাকে ক্লান্ত করতে পারে। স্বল্প সময়ের স্ট্রেস আপনার ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। তাই আপনার আরাম বলয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন।

পড়ুন  সকালের ক্লান্তি দূর করুন সহজ ৬টি উপায়ে

২। থাইরয়েড সমস্যা
সব সময় ক্লান্ত অনুভব করার আরেকটি কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়ডিজম। তাই আপনার এই সমস্যাটি আছে কিনা তা জানার জন্য সাধারণ ব্লাড টেস্ট যেমন- থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) এবং এডিশনাল থাইরয়েড টেস্ট T3 ও T4 গুলো করিয়ে নিতে পারেন।

৩। ব্যায়াম না করা
ব্যায়াম আপনাকে এনার্জেটিক থাকতে সাহায্য করে। ২০০৮ সালে সাইকোথেরাপি ও সাইকোসোমাটিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, নিম্ন মাত্রার ব্যায়ামের মাধ্যমেও অবসাদের লক্ষণ গুলো ৬৫% কমে।

৪। পানিশূন্যতায় ভোগা
খুব কম তরল খাদ্য গ্রহণ করা বা ডিহাইড্রেশনে ভুগলেও আপনার ক্লান্ত বা অবসন্ন অনুভব হতে পারে। যখন আপনি কম পরিমাণে তরল গ্রহণ করেন তখন আপনার রক্তচাপ কমে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে আপনি ক্লান্ত অনুভব করেন। আপনার তরল গ্রহণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য আপনার ইউরিনের বর্ণের দিকে লক্ষ্য করুন। যদি গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব হয় তাহলে বুঝতে হবে যে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। পানিশূন্যতা দূর করার জন্য সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন।

পড়ুন  মাসিকের সময় যে ৫টি খাবার খাওয়া জরুরি

৫। ঘুম কম হওয়া
আপনার ঘুমের মাত্রা আপনার এনার্জির উপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। কম ঘুম আপনার স্বাস্থ্য ও মেজাজের উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। তাই প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ও জেগে উঠার চেষ্টা করুন।

৬। স্থূলতা
স্থূলতা আপনার এনার্জি লেভেলের উপর প্রভাব ফেলে যার ফলে আপনি সারাদিনে ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করেন। তাছাড়া স্থূলতার ফলে আপনি স্লিপ এপ্নিয়ার মত নিদ্রাহীনতার সমস্যায় ভুগতে পারেন। যার কারণে দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব থাকে। তাই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।

৭। পুষ্টির ঘাটতি
অপর্যাপ্ত পুষ্টি আপনার ক্লান্তির কারণ হতে পারে। ৪টি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের অভাবে আপনি ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করতে পারেন। এগুলো হচ্ছে- আয়রন, ভিটামিন সি, বি১২ এবং ম্যাগনেসিয়াম। আয়রনের অভাবে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন বহন করে। তাই হিমোগ্লোবিন কমে গেলে ক্লান্ত অনুভূত হয়। কপারের ঘাটতির ফলেও অ্যানেমিয়া হতে পারে। ভিটামিন বি১২ খাদ্য কে এনার্জিতে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয়। তাই এর ঘাটতিতে এনার্জি লেভেলের উপর প্রভাব ফেলে। প্রায় ৩০০ মেটাবলিক রিএকশনের জন্য ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন। তাই ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হলে এনার্জির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং এর ফলে আপনি ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করতে পারেন। এই পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি যেন না হয় সেজন্য ফলমূল ও শাকসবজি খান।

পড়ুন  দুপুরে ঘুম ঘুম ভাব দূর করার কিছু সহজ উপায়

মিলিয়ে দেখুনতো এই কারণগুলো আপনার আছে কিনা? যদি এর কোন একটিও থেকে থাকে তাহলে তা দূর করার চেষ্টা করুন এবং এনার্জেটিক থাকুন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.