...

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

ঋতু পরিবর্তনের ফলে বাতাসে আদ্রতার ওঠা নামার কারণে এখন জ্বরের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। এ জ্বরগুলোর বেশির ভাগই ভাইরাসজনিত। আবহাওয়ার আকস্মিক পরিবর্তন, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পরিবেশ থেকে বেরিয়েই বাইরের প্রচণ্ড গরমে কাজ করা, আবার রোদে কাজ করতে করতে হঠাৎ করে খুব ঠান্ডা পানি পান করলে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। বিভিন্ন প্রকারের ভাইরাস জ্বর, বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ এ সময়ে বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া ঘন ঘন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হওয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে এডিস মশার ডিম পাড়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ কারণে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ: মানুষের শরীরে ভাইরাস আক্রমণের কয়েক দিনের মধ্যেই জ্বর দেখা দেয়। ভাইরাস জ্বরের কারণে শরীরে শীত-শীত ভাব, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, হাত-পায়ের গিরায় ব্যথা, খাবারে অরুচি, নাক দিয়ে অঝোরে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চুলকানি, ঠান্ডা, সর্দি, দেখা দেয়।জ্বর

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

অনেকের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, বমি ও ডায়রিয়া হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে টাইপ ‘বি’ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে পেটব্যথাও হতে পারে। বাতাসের মাধ্যমে ও আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি থেকেও ভাইরাস জ্বরের সংক্রমণ হতে পারে। ঠান্ডা লাগলে বা বৃষ্টিতে ভিজলেও ভাইরাস জ্বরের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। ভাইরাসের কোন ধরনের চিকিত্সা নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ অনুযায়ী চিকিত্সার প্রয়োজন হয়। যেমন: শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেন হাইটের বেশি হলে প্যারাসিটামল, সর্দি-কাশি হলে এন্টি-হিস্টামিন এবং পেশীর ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল অথবা চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ পেইন কিলার সেবন করা উচিত। ভাইরাস জ্বর হলে প্রচুর পানি পান করুন।

পড়ুন  গ্রীন টি পান করার উপকারিতা

সম্ভব হলে পানিতে লবণ বা খাওয়ার স্যালাইন মিশিয়ে নিন। বিশ্রাম নিন। গলাব্যথা কমাতে কুসুম গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করে দেখতে পারেন। খাবারের মধ্যে ভিটামিন সি ও জিঙ্কযুক্ত খাবারে প্রাধান্য দিন। শরীর পরিষ্কার রাখুন, গোসল করুন নিয়মিত। অযথা বৃষ্টিতে ভিজবেন না। শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। চার-পাঁচ দিনের বেশি হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তদের থেকে অন্যরা যাতে সংক্রমিত না হয় তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

আদা: চা অথবা গরম পানিতে লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে আদা কুচি খেতে পারেন। এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াই করে শরীর সুস্থ করে তুলবে।

তুলসীপাতা: ১চা চামচ জিরা এবং ৪ থেকে ৬টা তুলসীপাতা এক গ্লাস পানিতে নিয়ে সেদ্ধ করে খেলে জ্বর দ্রুত কমবে।

চালের সুজি: জ্বরের সময় আরেকটি উপকারী খাবার হলো চালের সুজির সঙ্গে সামান্য আদাকুচি ও সেদ্ধ করা সবজি। এসব খাবার পেটের ক্ষুধাও দূর করবে।

টমেটো ও গাজরের স্যুপ: টমেটো ও গাজরের স্যুপ খেলে জ্বর থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।

পড়ুন  এই সময় থানকুনি পাতা কেন খাবেন

কিসমিস: জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য কিসমিস একটি উপকারি খাবার। কিসমিসে বিদ্যমান ভিটামিন-সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

গোলমরিচ ও লবঙ্গ: নরম ভাত,খিচুড়ি অথবা আলু সেদ্ধর সঙ্গে একটু গোলমরিচ ও লবঙ্গ মিশিয়ে খেলে জ্বরে উপকার পাওয়া যায়।

ভাইরাস জ্বর থেকে সহজে মুক্তির সহজ কিছু পদক্ষেপ
বর্তমানে ভাইরাস জ্বর সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বেশির ভাগ ভাইরাস জ্বর নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়, কোন ঔষধের প্রয়োজন হয়না। বেশিরভাগ ডাক্তারই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে অনেক বেশি তরল খাদ্য গ্রহণ করার ও বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিছু সহজ ও ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে ১০ দিনেই ভাইরাস জ্বর থেকে নিরাময় লাভ করা সম্ভব।

আমাদের শরীরে ভাইরাসের আক্রমণের ফলে কিছু উপসর্গ সহ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ভাইরাস জ্বর হয়েছে বলা হয়।

লক্ষণ সমূহ:

ক্লান্ত লাগা
শরীরে বিশেষ করে মাংসপেশিতে ব্যাথা হয়
শরীরের তাপমাত্রা কম থাকতে পারে আবার অনেক বেশিও হতে পারে
গলায় ব্যাথা হয়
নাক দিয়ে পানি পরে
গলা ভেঙ্গে যায়
মাথা ব্যথা থাকে
চোখ লাল হয়ে যায় এবং চোখ জ্বালা করে
কফ থাকে
জয়েন্টে ব্যাথা হয়
স্কিনে র‍্যাশ হয়
ডায়রিয়াও হতে পারে

পড়ুন  জ্বর সারাতে সাহায্য করে যে ৯টি খাবার জেনে রাখুন

ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলে এই সব গুলো লক্ষণই যে প্রকাশ পাবে এমন কোন কথা নেই। কিছু ভাইরাস জ্বর পতঙ্গের কারণেও হয়ে থাকে।

যেমন- আরবোভাইরাস। এই ভাইরাসের আক্রমণে রক্তপাতের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রক্তপাত ত্বক থেকে বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গ থেকেও হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

প্রাথমিক অবস্থায় ভাইরাস জ্বর সনাক্ত করা গেলে কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায়ে সুস্থতা লাভ করা যায়। তাহলে ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেই এবার।

১। অনেক পানি পান করুন

ভাইরাস জ্বরে শরীরে পানি শূন্যতা হতে পারে তাই ডিহাইড্রেশন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে প্রচুর পানি পান করতে হবে।

২। ব্যক্তিগত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন

ভাইরাস জ্বর হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

যেমন-

নিয়মিত হাত ধোয়া উচিত
ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। ভিড়ের মধ্যে গেলে মুখ ঢেকে রাখা উচিত যাতে অন্যরা সংক্রমিত না হয়।
হাত না ধুয়ে মুখে বা নাকে স্পর্শ করা উচিত না।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.