...

বুকের কফ দূর করার ঘরোয়া উপায়

ঋতু পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেহের নানা প্রকার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও এটি অতিবিরক্তকর তবুও আমাদেরকে মেনে নিতে হই। আর ঋতু পরিবর্তনে যে সমস্যাটিতে সবাই বেশি পড়ে, তা হল সর্দি-কাশি। এটি আরও মারাত্মক হয়, যখন সর্দি বুকে বসে যায়। নানা ধরনের ঔষধ খেয়েও যখন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না, তখন বিপদের আর শেষ থাকে না। প্রাচীনকালের মানুষজনের এই ধরনের সর্দি-কাশি হলে তারা ঘরোয়া উপায়ে তার প্রতিকার করত, যার ফলে খুব দ্রুত এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেত। শুধু যে এটা বড় মানুষের হয় তা নয়, এটি শিশুদের জন্য অনেক মারাত্মক ধরনের রোগ। বিশেষ করে শিশুদের বুকে কফ জমে গেলে, মারাক্ত ধরনের বিপদ হতে পারে। তাই এই কফের চিকিৎসা খুব দ্রুত করা প্রয়োজন। না হলে শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই সর্দি, কফ দূর করতে পারেন।কফ

বুকের কফ দূর করার ঘরোয়া উপায়

❏ লবণ পানি: লবণ পানি বুকের সর্দি দূর করতে অনেক উপকার করে। বুকের সর্দি বা কফ এমন একটি সমস্যা, যার ফলে ঠিক মত কথা বলা যাই না এবং মাথা সবসময় ভার হয়ে থাকে। কফ দূর করতে সহজ এবং সস্তা উপায় হল লবণ পানি। লবণ শ্বাসযন্ত্র থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে খুব তাড়াতাড়ি। এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। এটি দিয়ে দিনে দুই তিনবার কুলকুচি করুন। কফ অনেকটা কমে যাবে।

পড়ুন  হাঁপানি হলে কি করবেন কি করবেন না!!!

❏ আদা: এক টেবিল চামচ আদা কুচি এক মগ পানিতে মেশান। এবার এটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে নিন। বলক আসলে এতে সামান্য মধু দিয়ে দেন। দিনে তিনবার এই পানীয়টি পান করুন। এছাড়া এক চা চামচ আদা কুচি, গোল মরিচের গুঁড়ো, এবং লবঙ্গের গুঁড়ো দুধ অথবা মধুর সাথে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি দিনে তিনবার পান করতে থাকুন। আপনি চাইলে এক টুকরো আদা নিয়ে মুখে চাবাতে পারেন। আদার রস বুকের কফ পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।

❏ পেঁয়াজ: সম পরিমাণের পেঁয়াজের রস, লেবুর রস, মধু এবং পানি একসাথে মিশিয়ে চুলায় জ্বাল দিন। কিছুটা গরম হলে নামিয়ে ফেলুন। কুসুম গরম এই পানি দিনে তিন থেকে চারবার পান করুন। এছাড়া পেঁয়াজের ছোট টুকরো খেতে পারেন। ফলে দ্রুতই কফ থেকে আরাম পেতে পারবেন।

❏ হলুদ: হলুদে থাকা কারকুমিন উপাদান বুক থেকে কফ, শ্লেষ্মা দূর করে বুকে ব্যথা দ্রুত কমিয়ে দেয়। এর অ্যান্টি ইনফ্লামেনটরি উপাদান গলা ব্যথা, বুকে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এটি দিয়ে প্রতিদিন কুলকুচি করুন। এছাড়া এক গ্লাস দুধে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে জ্বাল দিন। এর সাথে দুই চা চামচ মধু এবং এক চিমটি গোল মরিচের গুঁড়ো মেশান। এই দুধ দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। অনেক উপকার পাবেন।

পড়ুন  বুকের কফ দূর করার ঘরোয়া কিছু উপায় জেনে নিন

❏ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার: ভিনেগারের ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। এক কাপ কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ বিশুদ্ধ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এর সাথে এক চা চামচ মধু মেশান। এইবার এই পানীয়টি দিনে দুই তিনবার পান করুন। এক দুই সপ্তাহ পান করুন। দেখবেন বুকের কফ অনেক কমে গেছে।

❏ লেবু ও মধু: আমরা জানি লেবু ও মধু দেহের জন্য কতটা উপকার। আর এই লেবু পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। মধু শ্বাসযন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এমনকি এটি বুক থেকে কফ দূর করে গলা পরিষ্কার করে থাকে। সুতরাং লেবু এবং মধু কফের কার্যকারী হিসেবে কাজ করে।

❏ শক্ত ক্যান্ডি খেতে পারেন: এক পিস ক্যান্ডি খেয়ে দেখতে পারেন। ক্যান্ডি শক্ত কফ নরম করে দিতে সাহায্য করে এবং কাশি কমাতে সাহায্য করে।

❏ গরম পানির গড়গড়া: গরম পানির গড়গড়া করলে গলাব্যথা কমে যায়। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে ১৫ মিনিট ধরে গার্গল করুন। এভাবে বিরতি দিয়ে কয়েকবার করুন। এটি কাশি কমাতে বেশ কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি।

পড়ুন  খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়ার উপকারিতা

❏ গরম পানির ভাপ নিন: ফুটন্ত গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। চুলা থেকে পানি নামিয়ে নিন। এবার মাথার উপর একটি টাওয়েল দিয়ে বড় করে দম নিয়ে গরম পানির ভাপ নিন। এভাবে অন্তত ১০ মিনিট করে দিনে ২ বার করুন। গরম পানির ভাপ নিলে বুকে কফ জমতে পারে না এবং সহজেই বের হয়ে আসে।

❏ প্রচুর তরল খাবার খান: কফের সমস্যায় বেশি করে তরল খাবার খেলে উপকার পাওয়া যায়। সারাদিন প্রচুর পানি ও বিভিন্ন রকম জুস খান। তবে খুব ঠাণ্ডা পানি বা জুস খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যে সব তরল খাবার খেতে পারেন সেগুলো হলো: মুরগি ও সবজির স্যুপ খান। তবে ঘন স্যুপের চাইলে পাতলা ও স্বচ্ছ স্যুপ খাওয়া ভালো। হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে পান করুন। তুলসী পাতার চা পান করুন। হলুদ গুড়া, আদা চূর্ণ এক চা চামচ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে কফ নিরাময় হয়।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.