...

মধু দিয়ে রূপচর্চা

খাবারের পাশাপাশি রূপচর্চায় বহুদিন থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। তবে অনেকেরই জানা নেই মধু ব্যবহারের সঠিক নিয়ম। ত্বক ও চুলের যত্নে Honey অতুলনীয়। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে, বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান করতে ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে মধুর জুড়ি নেই। পাশাপাশি এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর নানান উপাদান। কোনও ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া বিশুদ্ধ মধু বেশি উপকারি। আজ ত্বক, চুল এবং নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে মধু ব্যবহারে কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়।মধু

মধু দিয়ে রূপচর্চা

ত্বকের নমনীয়তায়

মধু এক ধরনের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি বাতাস থেকে জলীয়কণা ত্বকের ভিতরে টেনে নেয় যা ত্বকের গভীরে নমনীয়তা ধরে রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘসময় ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে মধু দারুণ উপকারী।

নিয়মিত ১ টেবিল-চামচ পরিমাণ মধু পরিষ্কার ও শুষ্ক ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পরে কুসুমগরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেললে ত্বক হবে কোমল ও মসৃণ।

লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে

মধুতে আছে এনজাইম যা ত্বক ও লোমকূপের গভীরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে। এছাড়াও মধুতে বিদ্যমান অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, জজবা বা নারকেল তেল ত্বককে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

২ টেবিল-চামচ জজবা তেল বা নারকেল তেলের সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ বিশুদ্ধ Honey ভালোভাবে মিশিয়ে চোখের চারপাশের ত্বক বাদ দিয়ে মিশ্রণটি পরিষ্কার ও শুষ্ক ত্বকে হালকাভাবে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে হবে। তারপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

পড়ুন  অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক বিয়ে হবার আগে রোজ রাতে এটা লাগিয়ে নিন, ফেসিয়াল করার প্রয়োজন পড়বে না

কোমলভাবে ত্বক পরিষ্কার

মধুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এনজাইম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে পরিপূর্ণ। যা ত্বক করে পরিষ্কার, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মসৃণ। অন্যদিকে, বেকিং সোডাও ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের মৃতকোষ তুলে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে।

১ টেবিল-চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে ২ টেবিল-চামচ মধু মিশিয়ে পানিতে মুখ ধুয়ে মিশ্রণটি মুখে বা শরীরে বৃত্তাকারে হালকাভাবে মালিশ করে কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হবে।

ত্বকের কালো দাগ দূর করতে

বিভিন্ন কারণে ত্বকে দাগ হতে পারে যা ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে। মধু দাগ উঠিয়ে ত্বক করে উজ্জ্বল। এর ভেতরে থাকা অ্যান্টিইনফ্ল্যামটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের কালো দাগ কমাতে এবং টিস্যু পুনর্গঠনে সাহায্য করে।

এছাড়াও নারকেল বা জলপাইয়ের তেল ত্বকের মরাকোষ সতেজ দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের হালকা মালিশ রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বক সুস্থ রাখতে ও কোষ গঠনে সাহায্য করে।

১ টেবিল-চামচ বিশুদ্ধ মধুর সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ নারকেল বা জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে নিতে হবে। ত্বকের যেখানে দাগ বা ক্ষত চিহ্ন আছে সেখানে মিশ্রণটি লাগিয়ে ১-২ মিনিট হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে হবে। তারপর ত্বকে গরম তোয়ালে চেপে ধরে রাখতে হবে ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত। দৈনিক ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

পড়ুন  শীতকালীন মেকাপের কিছু টিপস

ব্রণ দূর করতে

কিশোরী থেকে শুরু করে মোটামুটি সব বয়সের মানুষের জন্য ব্রণ একটি চিন্তার কারণ। মধুর অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের লালচেভাব ও জ্বালাপোড়া কমিয়ে ত্বক ব্রণের হাত থেকে রক্ষা করবে।

আক্রান্ত স্থানে Honey লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

গোসলে মধু

দিন দিন দূষিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। আর এই দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ত্বক। মধুর জলীয়ভাব এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাবে।

২ টেবিল-চামচ মধু ১ কাপ গরম পানিতে ভালোভাবে মেশান। তারপর বালতিতে পানিতে ঢেলে গোসল করুন। এত ত্বক পরিষ্কার থাকবে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেও ত্বক রক্ষা পাবে।

চুলের কন্ডিশনার

মধুতে থাকা এনজাইম অনুজ্জ্বল চুলকে উজ্জ্বল করে। পাশাপাশি নারকেল তেল চামড়ার বাহিরের স্তরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে।

১ টেবিল-চামচ বিশুদ্ধ মধুর সঙ্গে ২ টেবিল-চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে রূক্ষ্ম চুলে ভালোমতো মালিশ করতে হবে। ২০ মিনিট রেখে তারপর ভালোভাবে মাথা পরিষ্কার করে ফেলুন।

শ্যাম্পু

চুল পরিষ্কার করতে অপরিহার্য হলো শ্যাম্পু। Honey চুলের নমনীয়তা বজায় রেখে চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে। পছন্দের শ্যাম্পুর সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে সাধারণভাবে মাথা ও চুলে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

পড়ুন  ৫ মিনিটে ফর্সা ত্বক পাওয়ার জাদুকরি ফেসপ্যাক

চুল রং করতে মধু

চুল হাইলাইট বর্তমান ফ্যাশনে দারুণ জনপ্রিয়। তবে রাসায়নিক রং চুলের ক্ষতি করতে পারে এই ভয়ে অনেকেই চুলে রং এড়িয়ে চলেন। তবে মধুর বিশেষ কিছু উপাদান আছে যা ধীরে ধীরে চুলের রং হালকা করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে চুল হাইলাইটস করার জন্য দারুণ কার্যকর Honey।

৩ টেবিল-চামচ মধুর সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ পানি মিশিয়ে তা পরিষ্কার চুলে ১ ঘণ্টার জন্য লাগিয়ে রাখুন। পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

রোদে পোড়া ভাব কমাতে

Honey ত্বকের গভীরে আদ্রতা ধরে রাখে। Honey এবং অ্যালোভেরা দুটোতেই আছে শক্তিশালি অ্যান্টিইনফ্ল্যামটরি যা ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমায়।

মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরা মিশিয়ে রোদে পুড়ে যাওয়া স্থানে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে রোদে পোড়াভাব কমে আসবে।

 

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.