...

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়

দিন দিন ডায়াবেটিস আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের প্রতিদিনের খ্যাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়মে ভরা ‘নিয়মিত’ জীবনযাপনই এর জন্য দায়ী এবং এসব কারণেই অন্তঃসত্ত্বা একজন মায়ের কাছ থেকে সেই সন্তানও এই রোগ পেতে পারে, যে এখনো জীবনের আলোই দেখেনি! গোটা উপমহাদেশেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি, এমন তথ্যই উঠে এসেছে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে।ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়

প্রতিদিন ঔষধ সেবন করতে পছন্দ করেন, এমন ক’জন মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাবে? এই রোগে আক্রান্তদের সবচেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ঘটনা ঘটে- রোগটি যদি নিয়ম করে আজীবন ইনসুলিন গ্রহণ ও ডায়ালাইসিসের পর্যায়ে পৌঁছে যায়- তখন।

অনেকেই মনে করেন, ডায়াবেটিসের একমাত্র কারণ মিষ্টি বা এ জাতীয় খাবার খাওয়া। কিন্তু মানসিক অবসাদ এবং বংশের ধাতের ওপরেও এ রোগ অনেকাংশে নির্ভর করে। অবশ্য বংশ পরম্পরায় কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে এক্ষেত্রে তেমন কিছু করার নেই।

কিন্তু তারপরও- রোগটিকে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে লাভ বৈ, ক্ষতি তো নেই!

তবে এ জন্য আপনাকে মোটেই প্রতিদিন ঔষধ সেবন করতে হবে না। কেবল নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে খানিকটা পরিবর্তন আনার মাধ্যমেই আপনি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে পারবেন।

পড়ুন  লম্বা হওয়ার জন্য ৩টি প্রয়োজনীয় টিপস জেনে নিন

যদি এরই মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান কিংবা কেউ যদি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থেকে থাকেন বা নাও থাকেন- ঝুঁকি বা সম্ভাবনা বা আশঙ্কা এড়াতে চান, তাহলে ঘরে বসেই তা করতে পারেন খুব সহজেই!

তিতকুটে খাবার কেউই খুব একটা পছন্দ করেন না। কিন্তু ঔষধ সেবনের চাইতে কি কোনো ফল বা সবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধই উত্তম নয়?

খালি পেটে তিতা করলার তৈরি শরবত খেলে তা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে- একথা চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত।

কেউ যদি একান্তই শরবতটি খেতে নাই চান, তাহলে তারা করলা খানিকটা আধা-ভাজা করে কিংবা স্টাফড করলাও খেতে পারেন। করলা দিয়ে চিপস তৈরি করে তা নিয়মিত নাশতায় যোগ করাও একটি ভালো উপায়।

এই খাদ্যাভ্যাস যে কেবল আপনার খাদ্যতালিকাতেই পরিবর্তন আনবে- তা নয়, আপনার স্বাদেও পরিবর্তন আনবে এবং তা হবে স্বাস্থ্যকর।

এছাড়া মেথির কয়েকটি দানা নিয়ে রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত পরিষ্কারের পর প্রথম কাজটি যা করতে হবে, তা হলো- ভেজানো মেথির দানাগুলো পানিসহ গিলে ফেলা, চাইলে চিবিয়েও খেতে পারেন।

পড়ুন  ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু তথ্য

ডায়াবেটিসের কারণে অগ্ন্যাশয়ে যে প্রভাব পড়ে, তা এড়াতে একটি কার্যকর প্রাকৃতিক ঔষধ হলো জাম ফল। শুধু ফলটিই নয়, এর বিচি শুকিয়ে, গুঁড়ো করে দিনে দু’বার পানি দিয়ে খেলে তাও দারুণ কার্যকর ঔষধি ফল দেয়।

পেয়ারা এমন একটি ফল, যা সারা বছরই কমবেশি পাওয়া যায়। উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি এবং আঁশে ভরপুর পেয়ারা সম্ভবত একমাত্র ফল, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নির্ভয়ে খেতে পারেন ইচ্ছেমতো।

অবশ্য সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পেয়ারার খোসায় থাকা খাদ্য উপাদান রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রয়োজন মনে করলে, পেয়ারার খোসা ছিলে ভেতরের ফলটিই কেবল খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন।

আমলকির শরবতও রক্তে শর্করা ও চিনির পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে প্রতিদিনের চা বা কফিতে চিনি বাদ দিন এবং এর পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করতে পারেন।

গবেষণায় দেখে গেছে, দুধ ও চিনি ছাড়া কেবল এক কাপ কালো চা কিংবা ব্ল্যাক কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।

এছাড়া সবুজ চা রক্তে চিনির মাত্রা কমায় এবং ইনসুলিন হরমোনের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে।

পড়ুন  ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকতে করণীয়

পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের সাথে কথা বলুন, ডায়াবেটিস নিয়ে আলোচনা করুন। নিশ্চিতভাবে এরকম আরো অসংখ্য ঘরোয়া পথ্য পাবেন, যেগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কার্যকর!

এছাড়া নিয়মিত হাঁটা এবং শারীরিক ব্যায়াম প্রতিদিনের কাজের তালিকায় যোগ করুন। সুস্থ থাকুন।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About পূর্ণিমা তরফদার

আমি পূর্ণিমা তরফদার আপনার ডক্টরের নতুন রাইটার। আশাকরি আপনার ডক্টরের নিয়ামিত পাঠকরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবেন ও আমার পোষ্টগুলো পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.