...

খাঁটি মধু চেনার উপায় কি?

মধু খাঁটি মধু চেনার উপায় কি?

মধু হল এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করেএবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। মধুতে উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল বিদ্যমান। এটি সুপেয়। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে মধুর ব্যবহারে চিনির চেয়ে অনেক সুবিধা রয়েছে। মধুর বিশিষ্ট গন্ধের জন্য অনেকে চিনির চাইতে মধুকেই পছন্দ করে থাকেন। বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু(Honey) স্বাদ, রং, হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধ। সুন্দরবনের বেশীরভাগ মধু কেওড়া গাছের ফুল থেকে উৎপন্ন। সুন্দরবনের মাওয়ালী সম্প্রদায়ের লোকেরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রয় করে জীবন নির্বাহ করে। মধুর অন্যান গুণ হল এটি কখন নষ্ট হয় না ৷

খাঁটি মধু চেনার সহজ কিছু উপায়:

আমরা জানি Honey আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মধু কতটা দরকারী। মধুর উপকারীতা এবং কার্যকারীতা বলে শেষ করবার মত নয়। তবে মধু যদি আসল না হয়ে ভেজাল যুক্ত হয়, কিংবা নকল মধু হয়, তখন কিন্তু হিতে বিপরিত হতে পারে। আর সম্পূর্ণা যেহেতু তার পাঠকদের কথা চিন্তা করে, তাই আজকে আমরা আপনাদের সামনে সহজ কিছু মধু পরিক্ষার টিপস নিয়ে হাজির হচ্ছি।

 

১. মধুর পানি পদ্ধতিঃ

এ পদ্ধতিতে আপনাকে এক গ্লাস পানির মধ্যে মাত্র এক চামচ মধু মিশাতে হবে। এক গ্লাস পানির মধ্যে আস্তে আস্তে নাড়ুন। যদি দেখেন মধুর সাথে পানি মিশে যাচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে এই মধুটি আসল মধু না। আর যদি মধু আসলই হয়ে থাকে, তাহলে Honey পানিতে মিশে যাবে না, বরং ছোট ছোট দলা আকারে পানির মধ্যে ছড়িয়ে যাবে। তবে এই পদ্ধতিতে আসল মধুর সাথে কিছুটা ভেজাল মেশালে তা সহজে বোঝা যাবে না।

পড়ুন  কালোজিরার ঔষধি ও পুষ্টি গুণ সম্বন্ধে জেনে নিন

যৌন জীবন মধুর হবে যৌন জীবন মধুর হবে যদি ঘরের কাজে সময় ব্যয় করেন

২.মধুর পিপড়া পদ্ধতিঃ

পিপড়া মিষ্টি জিনিষ পছন্দ করলেও Honey পছন্দ করে না। এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে, তবে আমরা সেদিক যাবো না। এক টুকরা কাগজে কিছু মধু লাগিয়ে যেখানে পিপড়া আছে সেখানে রেখে দিন। যদি পিপড়ারা এই কাগজের দিকে আকৃষ্ট হয়, এবং এটিকে ঘিরে ধরে, তাহলেই বুঝতে হবে এই মধূ আসল Honey না! আর যদি পিপড়ারা পাত্তাই না দেয়, আপনিই বুঝবেন যে এটা আসলেই আসল মধু।

 

৩. মধুর কাপড়ে দাগ পদ্ধতিঃ

এ পদ্ধতিতে পরিক্ষার জন্য প্রথমেই এমন এক টুকরা সাদা কাপড় নিন যেটি আপনি সব হয়ত আর পরবার কাজে ব্যবহার করবেন না। এবার কাপড়ে সামান্য মধু সরাসরি লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। যদি পানিতে ধুয়ে ফেললে দাগ চলে যায়, তাহলে বুঝবেন এটি আসল। নকল মধু/ভেজাল মেশানো মধুতে থাকা জিনিষ আপনার কাপড়ে দাগ ফেলবে, যা আসল মধু করে না।

Loading...

 

৪. ডিপ ফ্রিজ পদ্ধতিঃ

Honey একটি কিছুতে নিয়ে ডিপ ফ্রিজে একদিন রেখে দিন। একদিন পর মধু বের করে দেখুন, যদি আসল মধু হয়, তাহলে এটির সামান্য তম অংশও জমবে না। যদি পুরোটা জমে যায় কিংবা কিছু অংশ জমে কিংবা নিজের অংশ জমে আসছে এমন হয়, তাহলে বুঝবেন যে এটিতে ভেজাল আছে। আসল মধু ঠান্ডায় জমে যায় না।

পড়ুন  রূপচর্চায় মধু ও দুধের জাদুকরি ক্লিঞ্জার

 

৫. মধুর অগ্নি পরিক্ষাঃ

এ পরিক্ষার জন্য আপনাকে একটুকরা কটন উয়িক নিতে হবে। কটন উয়িক কি জিনিষ? ডান পার্শ্বের ছবিতেই পাবেন। এর এক প্রান্তে একটু মধু লাগিয়ে নিন। এবার এখানে আগুন ধরিয়ে দিন। এখান থেকে তিনটি ফলাফল আসতে পারে।
ক. আগুন জ্বলবে নাঃ এতে করে বুঝবেন যে মধুটি পুরাটাই নকল এবং এতে প্রচুর পরিমানে পানি আছে। ফলে আগুন জ্বলছে না।
খ. আগুন জ্বলবে, কিন্তু পটপট শব্দ হবেঃ এতে বুঝবেন যে মধুটি আসলই, শুধু ভিতরে পানি মেশানো আছে আরকি। শব্দ যত বেশী, পানি তত বেশী।
গ. আগুন জ্বলবে, শব্দ হবে নাঃ আমার মনে হয় আর বলে দিতে হবে না যে এমনটা হলে আপনি বুঝবেন যে এই মধু আসল মধু, এবং ভেজাল মুক্ত মধু।

 

৬. মেথিলেটেড স্পিরিট পদ্ধতিঃ

এর জন্য প্রথমেই আপনাকে যে কোন সাইন্স ইকুইপমেন্ট স্টোর থেকে মেথিলেটেড স্পিরিট কিনে আনতে হবে। পরিক্ষাটি সতর্কভাবে করবেন এবং হাত দিয়ে সরাসরি ধরবেন না। সমান পরিমানে মেথিলেটেড স্পিরিট এবং মধু নিতে হবে এবং নাড়তে থাকতে হবে। যদি দেখেন মধু তলানী হিসাবে জমা হচ্ছে, তাহলে বুঝবেন মধু আসল। আর যদি স্পিরিটের রং সাদাটে হয়ে আসে, তাহলে বুঝবেন মধুটি নকল।

পড়ুন  নিয়মিত আমলকি খাওয়ার ৭ কারণ

 

৭.মধুর ব্লটিং পেপার পদ্ধতিঃ

এই পরিক্ষার জন্যও আপনাকে কোন সাইন্স স্টোর থেকে ব্লটিং পেপার কিনে আনতে হবে। ব্লটিং পেপারের উপরে কয়েক ফোঁটা মধু নিন। যদি মধু ব্লটিং পেপারের ভিতরে আস্তে আস্তে ঢুকে যায় বা মিশে যায়, বুঝবেন এটি আসল মধু নয়। কারণ আসল মধু ব্লটিং পেপারকে ভেজায় না।

মেডিটেশন ( meditation) কি ? মেডিটেশনে মধুর জীবন

৮. চোখ পদ্ধতিঃ

প্রথমেই বলে নিচ্ছি, এটি না করাই ভালো। চোখের মধ্যে এক ফোঁটা খাঁটি মধু নিলে চোখ প্রথমে জ্বালাপোড়া, এর পর চোখ থেকে পানি পড়বে এবং সর্ব শেষে চোখের মধ্যে ঠান্ডা অনুভূতি হবে। আর যদি খাঁটি মধু না হয়, তাহলে এমনটি হবে না। তবে হ্যাঁ ভেজাল হিসাবে এমন কিছু যদি দেওয়া হয় যা চোখের জ্বালা-পোড়ার কারণ, তাহলে শুধু জ্বালা-পোড়া এবং পানিই বের হবে; কিন্তু চোখের মধ্যে ঠান্ডা অনুভূতি হবে না। শেষে আবারও অনুরোধ করবো এই পরিক্ষাটি না করবার জন্য।
ছোট-বড়, সুস্থ্য-অসুস্থ্য সবার জন্য মধু উপকারী। কিন্তু আসল মধু পাওয়া খুবই দুস্কর। তাই মধু পরীক্ষার পদ্ধতি জানা জরুরী। আর আমরা আশাকরি আজকের এই টিপস গুলি আপনাকে সেই কাজেই সহায়তা করবে।

ফেসবুক কমেন্ট

comments

About সাদিয়া প্রভা

সাদিয়া প্রভা , ইন্ডিয়ার Apex Group of Institutions এর BBA এর ছাত্রী ছিলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিয়সক তথ্য নিয়ে লেখালেখি করি।

One comment

  1. Thanks Doctor

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.